আইএসসি-তে দেশে সম্ভাব্য তৃতীয় অনুব্রত মণ্ডলকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র।
এই অনুব্রত মণ্ডল চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজানোর কথা বলেন না। বরং এ বারে আইএসসি-তে তিনি যে ফল করেছেন, তাতে তাঁর স্কুল ও এলাকার মানুষই তাঁর গুণ গাইছেন।
এই অনুব্রত মণ্ডল জানেন, তাঁর সমনামী রাজনৈতিক নেতার কথা। জানেন যে, সেই নেতা এখন গরু পাচার মামলায় বিচারাধীন বন্দি হয়ে তিহাড় জেলে। কিন্তু এই অনুব্রতের রাজনীতিতে আগ্রহ নেই। বরং আপাতত তাঁর লক্ষ্য আইআইএসইআর (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ)-এর পরীক্ষায় বসা।
তিনি বীরভূম থেকে প্রায় ২৭৫ কিলোমিটার দূরে, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহরের বাসিন্দা। এ বার আইএসসি (দ্বাদশ শ্রেণি) পরীক্ষায় দেশের মধ্যে সম্ভাব্য তৃতীয়। কন্টাই পাবলিক স্কুলের কৃতী ছাত্র, এই অনুব্রত মণ্ডল ৪০০-র মধ্যে পেয়েছেন ৩৯৭। ইংরেজিতে ৯৮, পদার্থবিদ্যায় ৯৯, রসায়নে ১০০, গণিতে ১০০, জীববিদ্যায় ৯৩। বোলপুরের কেষ্টর নাম শুনলেও চুপচাপ এই ছেলেটি রাজনীতি থেকে এখনও বরং তিনি বলছেন, ‘‘পড়াশোনার কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না। যখন ইচ্ছে হত, তখনই বই নিয়ে বসে যেতাম।’’
দশম শ্রেণির পরীক্ষাতেও ৯৮ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছিলেন এই কৃতী ছাত্র। তবে মেধা তালিকায় স্থান পাননি। বাবা পীযূষকুমার মণ্ডল ভগবানপুরের বিভীষণপুর হাই স্কুলের শিক্ষক। আর মা মহুয়া মণ্ডল কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী। বাবা-মা দু’জনেই কর্মব্যস্ত। প্রতিটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল অনুব্রতের। পড়ার ফাঁকে গল্পের বই পড়েন। ভাল লাগে ফুটবল খেলা দেখতে বা ডিসকভারি চ্যানেলে চোখ রাখতে। আপাতত আইআইএসইআর-এর পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছেন তিনি।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে কৃতী অনুব্রতকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের ফাঁকে তাঁর স্কুলের অধ্যক্ষ সমরেন্দ্রনাথ দাস বলছেন, ‘‘দীর্ঘ ১৫ বছর আমাদের স্কুলে পড়েছে। বরাবর ও খুব ভাল ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল স্বভাবের। অনুব্রতের সাফল্যে আমরা উচ্ছ্বাসিত।’’