বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
দলনেত্রী তাঁর জেলায় যাচ্ছেন, সোমবার সকাল থেকে সে নিয়ে উত্তেজিতই দেখিয়েছিল তাঁকে। আসানসোল জেল সূত্রের খবর, দিনভর তাঁর চোখ ছিল টেলিভিশনের পর্দায়। কিন্তু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটিতে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত নেতার ঠাঁই হয়েছে, সন্ধ্যায় সে খবর দেখার পরে টিভি বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবার সারা দিন কারও সঙ্গে বিশেষ কথাও বলেননি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, দাবি কারাকর্মীদের একাংশের।
সোমবার বোলপুরে মমতার উপস্থিতিতে বৈঠকে বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটিতে সদস্য সংখ্যা চার থেকে বাড়িয়ে সাত করা হয়। কমিটিতে ঠাঁই হয় নানুরের নেতা কাজল শেখের, যিনি অনুব্রত-বিরোধী বলে পরিচিত। আসানসোল জেল সূত্রের খবর, তাঁর অনুপস্থিতিতে মমতার জেলা সফরে কী ঘটছে, সে নিয়ে সে দিন সকাল থেকেই আগ্রহী দেখাচ্ছিল অনুব্রত ওরফে কেষ্টকে। প্রাতরাশের পরে জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডে টিভির সামনে বসে পড়েন। কর্মীদের একাংশের দাবি, নেত্রীর সফরে তিনি নেই, সে নিয়ে খানিক আক্ষেপও করেন। কিন্তু কোর কমিটির খবর দেখেই টিভি বন্ধ করে দেন।
জেল সূত্রে জানা যায়, অনুব্রতের অসুস্থতার কারণে রাতে তাঁর দিকে বাড়তি নজর রাখা হয়। ওষুধ খেয়েছেন কি না, কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, জেনে নেন কর্মীরা। সোমবার রাতে সে সব প্রশ্নে অতিসংক্ষিপ্ত জবাব মিলেছে বলে দাবি। অন্য দিন সকালে একটু দেরিতে ঘুম থেকে উঠলেও, প্রতি মঙ্গলবার সকাল-সকাল উঠে স্নান সেরে জেলের হনুমান মন্দিরে পুজো দেন অনুব্রত। কিন্তু এ দিন কিছুটা দেরিতে উঠে স্নান সারেন। অন্য দিন রোদে বসে কিছুটা সময় কাটালেও, এ দিন সেলের বাইরে পা রাখেননি। সারা দিন চুপচাপ ছিলেন। টিভিও দেখেননি।
গত ১৯ জানুয়ারি আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলার পরে, বীরভূম থেকে আসা দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন কেষ্ট। কিন্তু বিচারকের অনুমতি মেলেনি। তার পর থেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা লোকজনের সংখ্যা কমেছে। এ বার জেলা কোর কমিটিতে কাজলের অন্তর্ভুক্তি দলে তাঁর রাশ আলগা হওয়ার ইঙ্গিত বলে তৃণমূলের একাংশের ধারণা। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে অন্য বন্দি বা কারাকর্মীদের কাছে নীরবই থেকেছেন কেষ্ট, দাবি জেল সূত্রের।