সিউড়িতে তৃণমূলের কার্যালয়ে ব্যানারে অনুব্রতের ছবি। নিজস্ব চিত্র।
এ-ও যেন ‘কেষ্টদার প্রত্যাবর্তন’।
গত কয়েক মাস ধরে জেলায় দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উধাও হয়ে গিয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। রবিবার সেই ছবিতে হঠাৎই বদল। দেখা গেল, সিউড়িতে তৃণমূলের কার্যালয়ের সামনে লাগানো হচ্ছে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রতের ছবি। চর্চা শুরু হয়েছে, তা হলে কি পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জেলায় দলের কর্মীদের উৎসাহিত করতেই অনুব্রতের এই ‘প্রত্যাবর্তন’?
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, শুধু দলীয় কার্যালয়েই নয়, জেলা পরিষদ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা শাসক দলের এক ওজনদার প্রার্থীর সমর্থনে ফেস্টুন-ব্যানারেও অনুব্রতের ছবি ছাপা হয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও প্রার্থী চাইলে ভোট প্রচারে দলের জেলা সভাপতির ছবি ব্যবহার করতেই পারেন বলে অলিখিত নির্দেশও এসেছে, খবর তৃণমূল সূত্রে।
তবে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি গত কয়েক মাসে। অনুব্রত গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর প্রভাবশালী তকমা ঘোচাতে দলের উঁচুতলা থেকেই দলীয় কর্মসূচিতে অনুব্রতের নামে স্লোগান বা তাঁর ছবি ব্যবহারেও ‘নিষেধাজ্ঞা’ দেওয়া হয়েছিল বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। তার পর থেকেই সচেতন ভাবে দলীয় কর্মসূচিতে ‘ব্রাত্য’ ছিলেন কেষ্ট। অনেক দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সরানো হয়েছিল অনুব্রতর ছবি।
এ বছর জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের সময়ে তো বটেই, পরে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি এবং সম্প্রতি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতেও কোথাও অনুব্রতের ছবি দেখা যায়নি। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্যে অনুব্রতের প্রতি সমর্থন থাকলেও প্রচারে তাঁর ছবির উপস্থিতি কার্যত ছিল না।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কি ফের প্রচারে প্রাসঙ্গিক হচ্ছেন অনুব্রত? জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘অনুব্রত দলের জেলা সভাপতি। তিনি প্রাসঙ্গিক ছিলেন, আছেন, থাকবেন। ভোট প্রচারে তাঁর ছবি ব্যবহার হতেই পারে।’’ তবে এত দিন কেন তাঁর ছবি হঠাৎ বাদ পড়েছিল? মন্তব্য করতে চাননি ওই নেতা।
তৃণমূল সূত্রে দাবি, এ বার নেতা-কর্মীদের জেলা সভাপতির কোনও স্পষ্ট ‘নির্দেশ’ ছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেতে হচ্ছে। কিন্তু আগের যে কোনও নির্বাচনে ‘কেষ্টদা’র অবদান ভুলতে পারেননি দলের নেতাকর্মীরা। দলের নেতারা জানাচ্ছেন, একাধিক জায়গায় ভোট প্রচারে অনুব্রত প্রসঙ্গ উঠছিল। দলের কর্মীদের ভাবাবেগে যাতে আঘাত না লাগে, তাই অনুব্রতের ছবি ও নাম ব্যবহার করা নিয়ে নরম অবস্থান নেওয়া হয়েছে।