পছন্দ করে শাল কিনছেন অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
ছিল দলের কর্মী সম্মেলন। সেই মঞ্চে হুঙ্কার ছেড়েছেন কেন্দ্রের শাসক দলের উদ্দেশে। কাজে গাফিলতির অভিযোগে পদ থেকে সরিয়েছেন নিজের দলের অঞ্চল সভাপতিকে। কিন্তু, সম্মেলন শেষে অন্য অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট)-কে দেখলেন তৃণমূল কর্মীরা। কাশ্মীর থেকে আসা শাল বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিজে পছন্দ করে শাল কিনলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি। দলের কর্মীদেরও বললেন কিনতে। অনুব্রতের কথায়, ‘‘কাশ্মীরে কোনও মানুষ যাচ্ছেন না। ওঁরা এখানে এসে ব্যবসা করছেন, তো করুন না!’’
সোমবার দুপুরে সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন ছিল। সভা শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণ আগে স্টেডিয়ামের গেটের বাইরে তিন জন কাশ্মীরি শালবিক্রেতা এসে পৌঁছন।
সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই অনুব্রতের নির্দেশে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব ঘোষণা করেন, ‘‘বাইরে কয়েক জন কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা বসেছেন। যদি পছন্দ হয় কিনবেন।’’ তবে কেনার কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করা হয়, ‘‘এটা কোনও দলীয় নির্দেশ নয়। যাঁর পছন্দ হবে, দামে পোষাবে, তাঁরাই নেবেন।’’
আরও পড়ুন: স্বামী-হত্যায় ১৬ বছর পরে সাজা মকুব বৃদ্ধার
সম্মেলন শেষে ওই কাশ্মীরিদের কাছে যান অনুব্রতও। তবে, খানিক আগেই মঞ্চে তাঁকে যে দাপুটে ভঙ্গিতে দেখা গিয়েছে, তা তখন উধাও। হাল্কা মেজাজে নিজে পছন্দ করে ছ’হাজার টাকায় একটি শাল কেনেন তিনি। বাকিদেরও অনুরোধ জানান কেনার। সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘‘যার পছন্দ হবে কিনবে, যার হবে না কিনবে না।’’ তবে ‘কেষ্টদা’কে দেখে বাকি নেতারাও কেউ একটি, কেউ দু’টি করে শাল কেনেন।
কয়েক ঘণ্টায় বেশ কিছু শাল বিক্রি হয়ে যাওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও। কাশ্মীরের পহেলগাঁও থেকে আসা রামিজ় আহমেদ, তারেক লোন ও নাসির লোন বলেন, ‘‘আমাদের এক সপ্তাহে যা বিক্রি হয়, তা এক দিনেই হয়ে গেল। কেষ্টদাকে ধন্যবাদ।’’ তাঁরা জানান, অন্য বছর তাঁরা জানুয়ারির গোড়ায় পৌঁছন। এ বছর তাঁরা দুই মাস আগে চলে এসেছেন। কেন? নাসির বললেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর থেকেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। স্কুল, কলেজ, দোকানপাট বন্ধ। কোনও পর্যটক আসছেন না। আমাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধই। তাই এ বছর আগেই চলে এসেছি, কিছু বেশি শাল বিক্রির আশায়।’’ এই শাল বিক্রেতাদের প্রতি সহমর্মী অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁদেরও তো ঘরবাড়ি-সংসার আছে। তৃণমূলের এত সমর্থক রয়েছেন। তাঁরা যদি কেনেন, মন্দ কী!’’