ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখে ‘খেলা হবে’ স্লোগান শুনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন বিরোধী দলের নেতারা। ব্যাট ধরে ক্রিজে দাঁড়িয়েও এ বার সেই অনুব্রত ফের হুঙ্কার দিলেন, ‘‘খেলা হবে, ভয়ঙ্কর খেলা হবে।’’
সম্প্রতি বোলপুর তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। বুধবার ছিল সেই প্রতিযোগিতার ফাইনাল। বোলপুরের ডাকবাংলা ময়দানে এ দিন পৌঁছন অনুব্রত। খেলা শুরুর আগে ক্রিজে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন তিনি। এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখো হয়ে তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সালে খেলা আরম্ভ করেছিলাম শিবতলার মাঠে। মনে আছে? কটা বাজছে? ৯টার পর খেলা স্টার্ট করব। ভয়ঙ্কর খেলা। ২০১৭ সাল থেকে খেলা স্টার্ট করেছি।’’
অনুব্রতের এ দিনের মন্তব্যে আসলে বীরভূম জেলার রাজনৈতিক ইতিহাস ছুঁয়ে। বাম আমলে বোলপুরের শিবপুর মৌজায় শিল্পের নামে ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। সেই জমিতে ‘গীতবিতান’ আবাসন প্রকল্প এবং বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জমিদাতাদের একাংশ আন্দোলন শুরু করেন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সভার আয়োজন করেন বিক্ষুব্ধ জমিদাতারা। তাতে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা দেন আব্দুল মান্নান এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যেরা। কিন্তু পাল্টা জমায়েত করে তৃণমূল। দু’পক্ষের সংঘর্ষও বাধে। অভিযোগ, মঞ্চ ভেঙে দেন তৃণমূল কর্মীরা। আরও অভিযোগ ওঠে, গুলি চালানোর। পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের মারে জখম হন তঁদের এক কর্মীও। এর মধ্যেই খবর পেয়ে ওই দিন বিকেলে শিবপুর পৌঁছন অনুব্রত। তৎকালীন ডিএসপি কাশীনাথ মিস্ত্রিকে ডেকে নিজের হাতের ঘড়ি দেখিয়ে বলেন, “ক’টা বাজে? ৪.১৫ মিনিট। ৭টা পর্যন্ত সময় দিলাম। ৯টার মধ্যে আমি ঢুকে যাব। এক জনেরও বাড়ি-ঘর রাখব না। তাণ্ডবলীলা খেলে দেব। ভয়ঙ্কর খেলে দেব। আর যারা মেরেছে তাঁদের গ্রেফতার করুন। কোনও কাহিনি শুনব না।’’ এর পর একটু থেমে ফের বলেন, ‘‘এখানে উন্নয়ন হচ্ছে। কে মান্নান, কে সিপিএমের নেতা জানি না। হাত পা ভেঙে দেব।”