কদম-কদম: মিছিলে মহুয়া মৈত্র, শুভেন্দু অধিকারী ও অনুব্রত মণ্ডল। ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
তিনি মুখ খোলা মানেই খবর। কখনও ‘পুলিশকে বোম মারুন’ বলছেন তো কখনও ‘চড়়াম চড়াম’ ঢাক বাজাচ্ছেন।
মাঝে-মধ্যে অবস্থা এমনই দাঁড়ায় যে তাঁকে আড়াল করতে দলনেত্রীকে বলতে হয়, ‘ওর তো শ্বাসকষ্ট আছে, ব্রেনে অক্সিজেন কম যায়!’
সেই অনুব্রত মণ্ডলকেও সোমবার বীরভূম থেকে ডোমকলে নিয়ে এল তৃণমূল। কারণ সেই একটাই— পুরভোটের মরিয়া লড়াই। এবং মাঠে নেমেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে কার্যত মেঠো ভাষায় আক্রমণ করলেন অনুব্রত। সন্ধ্যায় হিতানপুর ও মানিকনগরে সভায় অনুব্রত বললেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের মানুষ কেন যে ওকে (অধীরকে) মাথা নেড়া করে ঘোরায় না, সেটাই আমি বুঝতে পারি না। অধীরের কোনও লজ্জা নেই, আদতে পিত্তই নেই তো লজ্জা থাকবে কী করে! ওর গায়ে গণ্ডারের চামড়া।’’
অবস্থান: বাধা পেয়ে রাস্তায় বসলেন অধীর। নিজস্ব চিত্র
তার আগেই অবশ্য পুলিশ মিছিল আটকানোয় রাস্তায় বসে পড়েছেন অধীর। ভাতশালার গাবতলায় জোট ও তৃণমূলের মিছিল একই পথে চলে আসায় পুলিশ জোটের মিছিল আটকে দেয়। তার প্রতিবাদে রাজ্য সড়কে বসে পড়েন সিপিএম-কংগ্রেস জোটের নেতা অনিসুর রহমান, অধীর চৌধুরী, বদরুদ্দোজারা। তাঁদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই এ ভাবে মিছিল আটকেছে পুলিশ। প্রায় আধঘণ্টা পরে রাস্তা ছাড়ে পুলিশ। তার পরে আবার মিছিল শুরু হয়। শেষ হয় রঘুনাথপুরে। সেখানে একটি সভাও করে তারা।
সেখানে মিছিল আটকানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অধীর বলেন, ‘‘তৃণমূল ও পুলিশ পরিকল্পনা করেই এই ভাবে মিছিল আটকেছে। পুরভোট নিয়ে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতেই এমন করছে ওরা। পায়ে পা রেখে ঝামেলা করতে চাইছে।’’
বিকেল ৪টে নাগাদ ডোমকলে যুব তৃণমূল নেতা তথা এই পুরভোটে তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী সৌমিক হোসেনের বাড়িতে হাজির হন অনুব্রত। সেখানে মিনিক কয়েক বসে চা খেয়ে রওনা হন ভাতশালা এলাকার মিছিলে। সেখান থেকে শুভেন্দু অধিকারী, মহুয়া মৈত্রদের সঙ্গেই হাঁটতে শুরু করেন তিনি। মিনিট কয়েক হাঁটার পরেই অনুব্রত ঘেমে-নেয়ে ওঠেন। উঠে পড়েন গাড়িতে। চলে যান সোজা হিতানপুর। সেখানে তাঁর মিনিট কয়েকের বক্তব্যে শুরু থেকেই আক্রমণের কেন্দ্রে ছিলেন অধীর। অনুব্রত দাবি করেন, ‘‘অধীরবাবু সব থেকে বড় দাঙ্গাবাজ। উনি এখানে দাঙ্গা বাধাতে চাইছেন। কংগ্রেস গিরগিটি। ৭০ বছর ক্ষমতায় থেকেছে, ইচ্ছে করলে এই জেলাকে সাজিয়ে ফেলতে পারত। কিন্তু তারা সেটা করেনি।’’ তার পরেই তাঁর আর্জি, ‘‘আপনারা আমাদের ভোট দিন। কথা দিচ্ছি, আমি দিদিকে বলব ডোমকলকে সাজিয়ে দিতে।’’ মিছিল শেষে বর্তনাবাদ এলাকায় সৌমিকের সমর্থনে সভা করেন শুভেন্দুও। এ দিনই ডোমকলে এসেছিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহ। ডোমকল ঘুরে দেখেন তিনি।