প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি।
দলবদলের ‘আয়ারাম গয়ারাম’ রাজনীতি ঠেকাতে বর্তমান দলত্যাগ বিরোধী আইন যথেষ্ট নয়। মঙ্গলবার ‘সংবিধান দিবসে’ রাজ্য বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে এই মন্তব্য করেন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার প্রয়োজন।’’
রাজ্য বিধানসভায় এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন কুরেশি। সংবিধানে নির্দিষ্ট দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে বক্তৃতা করেন তিনি। প্রসঙ্গত, রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল ব্যালট পেপারে ভোটের ব্যবস্থার দাবি জানালেও কুরেশি এদিন বলেন, ‘‘ইভিএম-এ ভোট নেওয়া হোক। আর ভিভিপ্যাট ১০০% ক্ষেত্রেই চালু করা হোক।’’ শুধু তাই নয়, দেশের নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রেও শাসকদের উপরে নির্ভর করতে হয়।’’
অনুষ্ঠানে এ রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন সংবিধান রক্ষার প্রয়োজন ব্যাখ্যা করেন। সংবিধানে নির্দিষ্ট নাগরিকের অধিকার ব্যাখ্যা করে নারায়ণন বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তা দেওয়াই শুধু নয়, তাঁরা যাতে কোনওভাবে বঞ্চিত না হন, তা দেখা দরকার।’’ একইভাবে সংবিধানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার মীরা কুমার। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। রাজ্যপালের এক্তিয়ার চিহ্নিত করে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য ও রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক পুরনো। তা আরও নির্দিষ্ট করে আলোচনা করা প্রয়োজন।’’ রাজ্যপাল সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে পারেন না। এমনকী এককভাবে কোনও সিদ্ধান্ত পারেন না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংবিধান নিয়ে আলোচনায় বিরোধীদের যথেষ্ট সময় না দেওয়ায় এদিন দ্বিতীয়ার্ধে অধিবেশন বয়কট করে কংগ্রেস ও বামেরা। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, সংবিধান রক্ষার নামে এখানে বিরোধীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হচ্ছে।