বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি সাধন মণ্ডলের সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করতেন বলে ধৃত (ডান দিকে) স্বপন মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশের। —নিজস্ব চিত্র।
বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি সাধন মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় আরও ১ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষ্ণুপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অভিযোগ, সাধনের গতিবিধির যাবতীয় তথ্য তিনি জানাতেন এই খুনের ‘মূলচক্রী’ বিজেপি নেতা ভাস্কর মালকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার ভাস্করকে গ্রেফতারির পর রাতভর তাঁকে জেরা করা হয়েছে। জেরায় স্বপন মণ্ডলের সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এর পরেই মঙ্গলবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ভাস্করের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট এবং চ্যাট ঘেঁটেও স্বপনের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন নজরে পড়েছে বলে দাবি। ওই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনও খতিয়ে দেখা হয়েছে। তা ছাড়া, ভাস্করকে জেরা করে যে সব তথ্য জানা গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হবে ভাস্করকে। তাঁকে জেরার জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। অন্য দিকে, স্বপনকেও জেরা করা শুরু করেছে পুলিশ। বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘সাধন মণ্ডল খুনের ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
রবিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার দুর্গাবাটি এলাকায় খুন হন সাধন। ওই এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি ছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সময় এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন সাধন। সে সময় কয়েক জন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে এসে সাধনকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। এই ঘটনায় শুভাশিস মণ্ডল ওরফে ভুতু, স্বপন মণ্ডল, তাপস মণ্ডল, অরুণ মণ্ডল এবং স্বরূপ মণ্ডল নামে ৫ জন স্থানীয় বাসিন্দার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই এলাকায় ‘বিজেপি কর্মী’ হিসাবে পরিচিত। পাশাপাশি, বিষ্ণুপুরের আঁধারমানিক অঞ্চলের বিজেপি নেতা ভাস্করকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, সাধনকে খুনে ‘মূলচক্রী’ হলেন ভাস্কর। বিজেপির আঁধারমানিক অঞ্চলের আহ্বায়ক ভাস্করের বাড়িতে রবিবার দুপুরে একটি বৈঠকে সাধনকে খুনের ছক কষা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। সেখানে স্বপন এবং শুভাশিসও হাজির ছিলেন। পুলিশের আরও দাবি, প্রতি সন্ধ্যায় সাধন যে চায়ের দোকানে যান তা জানতেন তাঁরা। তাই সাধনকে খুনের জন্য ওই সময় বেছে নেওয়া হয়েছিল।