ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। বুধবার দুই জেলায় দুই যুবক মারা গেলেন। মঙ্গলবার হুগলির শ্রীরামপুরের ৫ বছরের ডেঙ্গি আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যু হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বুধবার মারা গেলেন এই জেলারই ভদ্রেশ্বরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোনু চৌধুরী (২৪) এবং উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার মামুরাবাদের ফারুক মণ্ডল (৩২)। হাসপাতালে ভর্তি করানো হলও বাঁচানো যায়নি কাউকেই।
পর পর দু’দিনে হুগলিতে দু’জনের মৃত্যুতে ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে জেলায়। সোনু ভদ্রেশ্বরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তেলেনিপাড়ার মালাপাড়া বাই লেনের বাসিন্দা ছিলেন। চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পড়াশোনা করছিলেন। পরিবারের লোকেরা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর জ্বর সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা, গায়ে ব্যথা এবং বমির উপসর্গ ছিল। শনিবার তাঁকে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ডেঙ্গির জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়ে। মঙ্গলবার তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। বুধবার তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথেই তিনি মারা যান। দেহ চন্দননগর হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।
যুবকের মৃত্যুর শংসাপত্রে চিকিৎসক ‘ডেঙ্গি’র উল্লেখ করেছেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার তাঁর প্লেটলেট ৪০ হাজারের নীচে নেমে যায়। বুধবার সকালে তাঁর চোখে ‘হেমারেজ’ ধরা পড়ে। জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়। শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যায়। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই যুবকের এনএসওয়ান পজিটিভ ছিল। যকৃতের কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। ডেঙ্গির কারণে তা কিনা, নিশ্চিত নই। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: শোকের গাঁয়ে মমতা-ছায়া, মিলল ক্ষতিপূরণও
এলাকায় নিয়মিত সাফাই না-হওয়ায় মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে ওই যুবকের পরিবারের দাবি। তাঁরা জানান, দুর্গাপুজোর সময় থেকেই এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গি ছড়িয়েছে। সোনুর মা বাসন্তীদেবী বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে ভুগে আমিও আট দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। ছেলেটা বাঁচলই না।’’ পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেছেন, প্রতিটি ওয়ার্ড ধরে ডেঙ্গি রোধে নির্ধারিত সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়। সচেতনতা প্রচারও চলছে।
জ্বর হওয়ায় দেগঙ্গার ফারুখকে মঙ্গলবার হাড়োয়া হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। মঙ্গলবার তাঁকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে তিনি মারা যান। মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে, দাবি পরিবারের। স্থানীয় কারখানায় সেলাইয়ের কাজ করতেন ফারুক। তাঁর ৭ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।