ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া ভক্ত-পাগল-গোঁসাইদের বিক্ষোভ। শনিবার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা আপাতত বাতিল হয়েছে। ক্ষোভ বাড়ছে মতুয়াদের মধ্যে। মতুয়া মন রাখতে শনিবার তড়িঘড়ি ঠাকুরবাড়ি পৌঁছলেন মুকুল রায়-সহ অন্য বিজেপি নেতারা। মুকুল আশ্বস্ত করে বললেন, ‘‘যে কোনও দিন অমিতজি আসবেন। ২৪ থেকে ২৬ ঘণ্টার নোটিসে এখানে সভা করবেন। তাই ভাঙা হচ্ছে না মঞ্চ।’’
নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে অমিতের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি চান বনগাঁর সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। কারণ, ‘চাপ’ বাড়ছে তাঁর উপরেও। সভা বাতিল হল। পিছিয়ে গেল প্রতিশ্রুতি পাওয়ার সম্ভাবনাও। শান্তনুকে আশ্বস্ত করতে এ দিন ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছে এক ঘণ্টা ধরে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন মুকুল, বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব কুমার বলিয়ানরা। তবে পরিস্থিতি যে ঘোরালো তা স্পষ্ট হয় বৈঠক চলাকালীন। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে কিছু মতুয়া ভক্ত। তাঁরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘আমরা নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই।’’ কেন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন? কৃষ্ণপদ মণ্ডল নামে এক মতুয়া ভক্ত বলেন, ‘‘কথা দিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন এলেন না, এটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। আমরা ক্ষুব্ধ এবং হতাশ।’’ বিক্ষোভকারী মতুয়াদের বুঝিয়ে শান্ত করা হয়। পরে মুকুল বলেন, ‘‘অমিতজি লোকসভা এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। শান্তনুর সঙ্গে অমিতজির ফোনে কথা হয়েছে।’’ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক শেষে শান্তনুকেও বলতে শোনা যায়, ‘‘দেশটা তো আগে বাঁচাবেন। উনি (শাহ) কথা দিয়েছেন এই মঞ্চে শীঘ্রই তিনি সভা করবেন।’’
মতুয়া-মন পেতে আসরে নেমেছে তৃণমূলও। আগেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া পোস্টার, ফ্লেক্সে ভরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন এলাকা। শাহের সভা বাতিলের পর তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘দিল্লির বিস্ফোরণে কোনও হতাহতের খবর নেই। অথচ সেই অজুহাত দেখিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এলেন না। বাস্তবে মতুয়াদের ভাবাবেগ, দাবির কোনও মূল্য নেই ওঁদের কাছে। গোটা মতুয়া সমাজকে অপমান করেছে বিজেপি।’’ বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরের মন্তব্য, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভা বাতিল করেছেন কারণ, তিনি জানতেন, এখানে এসে তিনি মতুয়াদের নাগরিকত্ব দিতে পারবেন না।’’