জামিন পেলেন আনিসুর রহমান। — ফাইল চিত্র।
রেশন দুর্নীতি মামলায় এ বার জামিন পেলেন দেগঙ্গার তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমান। গত বছর অগস্টে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন আনিসুর এবং তাঁর ভাই মুকুল রহমান ওরফে আলিফ নুর। বুধবার কলকাতার বিচারভবনে জামিন পেলেন আনিসুর। গত সপ্তাহে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জামিন পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু।
বুধবার বিচারভবনে আনিসুরের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। যদিও জামিনের কিছু শর্ত দিয়েছেন তিনি। আনিসুরকে আদালতে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। তদন্তকারী অফিসার (আইও) যখন তদন্তের খাতিরে তাঁকে ডাকবেন, তখন যেতে হবে। নিজের মোবাইল নম্বর আইওকে জানাতে হবে। অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারবেন না আনিসুর। এই মামলার কোনও তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা চলবে না। আনিসুর কোনও অপরাধ করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, এই মামলার পরের শুনানিগুলিতে হাজিরা দিতে হবে দেগঙ্গার তৃণমূল নেতাকে।
২০২৪ সালের অগস্ট মাসে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক চালকলে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তালিকায় ছিল দেগঙ্গায় আনিসুরের ভাই আলিফের বাড়ি এবং চালকল। এই আলিফ আবার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বাকিবুর রহমানের আত্মীয়। বাকিবুরকেও রেশনকাণ্ডে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গত অগস্ট মাসে জামিন পান তিনি। আলিফের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দু’টি মোবাইল তদন্তের কারণে নিয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ ছাড়া বেশ কিছু নথিপত্র এবং ১৩ লক্ষ টাকাও বাজেয়াপ্ত করে ইডি। এর পরেই আনিসুর এবং তাঁর ভাই আলিফকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়। আনিসুর এবং আলিফ সেই তলবেই হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে ইডি দাবি করেছিল, জ্যোতিপ্রিয়ের সংস্থাকে ১০ লক্ষ টাকা দিতেন আনিসুর এবং আলিফ। ইডি আদালতে আরও দাবি করেছিল, জ্যোতিপ্রিয়ের চিঠি পাওয়ার পর এই রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে বিভিন্ন বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর ওই ‘চিঠি’ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল । ইডির দাবি, সেই চিঠিতে একটি নাম ছিল ‘মুকুল’। ঘটনাচক্রে, ধৃত আলিফের আর এক নাম মুকুল। বুধবার জামিন পেলেন সেই আনিসুর। যদিও মুকুল এখনও জেলে।