আমতার কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েতে বাম-কংগ্রেস জোটের সমর্থনে দেওয়াল লিখছেন মৃত ছাত্র নেতা আনিসের বাবা সালেম খান। ছবি: সুব্রত জানা।
ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। সিবিআই তদন্তের দাবি মেটেনি। হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর বিচার চাইতে এ বার জনতার দরবারে তাঁর বাবা সালেম খান। নিজে ভোটে দাঁড়াননি। তবে, তৃণমূলকে হারাতে বদ্ধপরিকর। তাই নিজের এলাকা আমতা-২ ব্লকের কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েতে বিরোধীদের হয়ে প্রার্থী বাছাই, প্রচার কৌশল ঠিক করা, এমনকি দেওয়াল লিখনেও হাত লাগিয়েছেন বছর পঁয়ষট্টির এই মানুষটি।
সালেমের কথায়, ‘‘আমার বিশ্বাস, ছেলে তৃণমূলের বিরোধিতা করায় তাঁকে পুলিশ পাঠিয়ে খুন করা হয়। আমার এই লড়াই তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য।’’
এই পঞ্চায়েতে ১৪টি আসন। বিদায়ী বোর্ডে সবগুলিই ছিল তৃণমূলের দখলে। এ বার সিপিএম-কংগ্রেস এবং আইএসএফ এখানে একজোট হয়েছে। ১৩টি আসনে সিপিএম এবং একটিতে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। আইএসএফ প্রার্থী না দিলেও তাঁদের কর্মীরাও সঙ্গে আছেন বলে দাবি সালেমের।
তাঁদের ১৯৬ নম্বর বুথে প্রার্থী হয়েছেন আনিসের মামা সাবির খান। সেখানকার পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী আনিসের দাদা সামসুদ্দিন। সালেম বলেন, ‘‘আমার প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। রাজি হইনি। প্রার্থী হলে বাকি লড়াই কে লড়বে?’’
সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরাও বিশ্বাস করি, তৃণমূলের পুলিশই আনিসকে খুন করেছে। সালেমের লড়াইয়ের শরিক আমরাও।’’ একই মত কংগ্রেস নেতা অসিত মিত্রেরও।
এই বুথে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী বোর্ডের উপপ্রধান হাসেম খান। পুলিশের কাছে তাঁর বিরুদ্ধেই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন আনিস। হাসেমের দাবি, ‘‘আমি বা দলের কেউ ওই ঘটনায় যুক্ত নন। নির্বাচনের ফলেই তা প্রমাণ হয়ে যাবে।’’ ২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই পঞ্চায়েতের সারদা গ্রামের বাসিন্দা আনিসকে ধরতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। ধরপাকড়ের সময় তিনতলা থেকে পড়ে মারা যান আনিস। এই সংক্রান্ত মামলাটি এখন চলছে আমতা আদালতে।