আনিস খানের বাবা সালেম খান। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর জট খুলতে রাজ্য সরকারের গড়া ‘সিট’ বা বিশেষ তদন্তকারী দলের উপরে ফের অনাস্থা প্রকাশ করলেন তাঁর বাবা সালেম খান। তাঁর অভিযোগ, ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার পরে ১৫ দিন কেটে গেলেও সিট এখনও অভিযুক্তদেরই চিহ্নিত করতে পারেনি। তাই আবার সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির একটি দলকে নিয়ে সিটের সদস্যেরা সোমবার আনিসের বাড়ি যান। ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁকে কলকাতা হাই কোর্ট এই মামলায় তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিযুক্ত করেছে। ঘটনার রাতে কী হয়েছিল, সালেমের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়। ঘটনাস্থলও খুঁটিয়ে দেখে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দল।
আগামী বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে আনিসের মৃত্যুর তদন্ত সংক্রান্ত মামলার ফের শুনানি হতে পারে। সিট সূত্রের খবর, কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সে-দিন আদালতে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে পারে তারা।
এ দিন সিটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সালেম বলেন, ‘‘১৫ দিন কেটে গিয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে সিট-কে সাহায্য করা সত্ত্বেও ওরা এখনও ছেলের খুনের তদন্ত করছে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল চার জন। যে-দু’জনকে ধরেছে, তাদের চিনতে পারলাম না। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বলে জানিয়ে সিট আমার হাতে তিনটি পাতা ধরিয়ে দিয়েছে। তা থেকে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার এখনও বিশ্বাস, সিটের এই তদন্ত আসল ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। আমরা তাই সিবিআই তদন্তই চাই।’’
ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লার বিরুদ্ধে আমতা থানায় অভিযোগ করেছেন আনিসের দাদা সাবির। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভাইকে খুনের চক্রান্তে সওকতও শামিল ছিলেন। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধেও তদন্ত করুক।’’ সাবির বলেন, ‘‘শুনলাম সওকত মোল্লা নাকি বলেছেন, আমার ভাই জলের পাইপ বেয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে মারা গিয়েছে। আমাদের ঘরে এসে সওকত দেখুন, কোনও জলের পাইপ আছে কি না। সওকতের এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সিটের তদন্ত কোন দিকে যাচ্ছে।’’ আমতা থানা সূত্রের খবর, সওকতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘আমি ও-ভাবে বলতে চাইনি। আমার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আমরা মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না।’’
সাবিরকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কলকাতার বেনিয়াপুকুর থেকে ধৃত শেখ সারওয়ার হোসেনকে সোমবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশি সূত্রের খবর, ধৃতকে জেরা করে ফোনে হুমকি দেওয়ার কারণ জানার চেষ্টা হবে।