কবরস্থান ঘুরে দেখছেন পুলিশকর্তারা
আনিস-হত্যা মামলায় দ্বিতীয় বার নিহত আনিস খানের দেহের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তার পরেই হাওড়ার আমতায় নিহত ছাত্রনেতার কবরের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে গেল আমতা থানার পুলিশ। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের নির্দেশের আগেই আনিসের কবরে পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছিল ছাত্রনেতার পরিবার। কিন্তু সেই সময় পুলিশের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, আদালতের নির্দেশের পর পুলিশ দ্রুত ‘সক্রিয়’ হয়েছে। যদিও পুলিশের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
ছাত্রনেতার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল আমতা। আনিসের পরিজনেরা, তাঁর বাবা এবং পাড়া-পড়শিরা ‘অরাজনৈতিক মিছিল’ করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতা থানা ঘেরাও করেন। ওই সময়েই আনিসের বাবা সালেম খান ছেলের কবরের জন্য পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চান। তাঁর আশঙ্কা ছিল, পরিবারের অনুমতি না-নিয়ে কবর খুঁড়ে ছেলের দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। তখনও অবশ্য আদালত দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়নি।বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালত দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর সন্ধ্যায় আনিসের পরিবারের সঙ্গে আবার দেখা করতে যান রাজ্যের গঠন করা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর সদস্যরা। তাঁরা আনিসের বাবা সালেম খান, দাদা সাবির খান-সহ পরিবারের বাকি সদস্যদের কথা বিস্তারিত কথাও বলেন।
এর কিছু পরে জেলা আদালতের বিচারকের তত্ত্বাবধানে আনিসের দেহের দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। তার পরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনিসদের বাড়ির পাশে অবস্থিত ওই কবরস্থানে যায় পুলিশ। কবরস্থানের কোথায় কোথায় আলো আর সিসি ক্যামেরা লাগানো জরুরি, নজরদারির জন্য কবরস্থানে কোনও পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে কি না বা হলেও কত জন— এই সব বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন পুলিশকর্তারা। প্রসঙ্গত, আনিসের দেহ কবর দেওয়ার অব্যবহিত পরেই নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে কিছু আলো লাগিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। তবে তা একান্ত ভাবেই তাঁদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে।
প্রসঙ্গত, তদন্তে ‘স্বচ্ছতা’ বজায় রাখতে গত দু’দিন ধরে সিট-এর সদস্যরা আনিসের দেহের দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের অনুমতি চেয়ে আসছে পরিবারের কাছে। কিন্তু তার অনুমতি দেননি ছাত্রনেতার বাবা সালেম। এর জেরে আনিসের পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তে ‘অসহযোগিতা’র অভিযোগ তুলেছিলেন সিট-এর সদস্যরা। এমনকি, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তে পরিবারের অনুমতি না-দেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। ওই দিন রাজ্য পুলিশের ডিজিপি মনোজ মালবীয়ও সাংবাদিক বৈঠকে একই কথা বলেন। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, এর পরেই বৃহস্পতিবার সকালে আনিসের পরিবার ও পড়শিদের আমতা থানা অভিযান চলাকালীন কবরস্থানে নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তোলা হয়।