‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’- এর ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার 'আনন্দবাজার অনলাইন'
রথের দড়িতে টান পড়া মানেই বাতাসে পুজোর গন্ধ। রথযাত্রার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। প্রথা মেনে রথের দিনে খুঁটি পুজো করেন পুজো উদ্যোক্তারা। আর কলকাতার এই বড় বড় সমস্ত দুর্গাপুজোগুলোকে এক ছাদের তলায় নিয়ে এসেছে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ নামের সংগঠনটি। বর্তমানে দুর্গাপুজোর আয়োজনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে এই ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধন থেকে শিল্পীদের সুবিধা-অসুবিধা সব দিক খেয়াল রেখে বিচার বিবেচনার সহিত সুষ্ঠভাবে পুজোর চারদিন দর্শনার্থীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেন এই সংগঠনের সদস্যরা।
পাশাপশি এই ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’- এর সমাজসেবামূলক কার্যক্রম মূলত সারাবছর ধরে চলতে থাকে। রক্তদান থেকে শুরু করে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ সম্পর্কে সচেতনামূলক প্রচার, দুঃস্থদের শীতবস্ত্র প্রদান ইত্যাদি। এই ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’- এর হাত ধরেই বাঙালির চিরন্তন মহোৎসব দুর্গাপুজো আজ সর্বজনীন থেকে বিশ্বজনীন। গত বছর ইউনেস্কো (UNESCO) থেকে বাংলার দুর্গাপুজোর জন্য মিলেছে ‘ইনট্যানজিবল হেরিটেজ’ স্বীকৃতি। করোনা আবহেও বেশ পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিল ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’।
এই বছর প্রথম ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার হিসেবে 'আনন্দবাজার অনলাইন'-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’। এই অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন এবং ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর উদ্যোক্তারা বেশ আশাবাদী। সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার এই অভিনব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এই বছরের দুর্গাপুজোকে গৌরবান্বিত করে তুলবে বলে আশা করা যায়।
ফোরাম ফর দুর্গোৎসব-এর সহকারী সভাপতি নির্মল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আনন্দবাজার অনলাইনকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যে সব পুজো প্রচার পায় না, তাদের জন্য এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ভীষণ ভাল। প্রচারের মাধ্যম হিসেবে আনন্দবাজারকে বাদ দিয়ে ভাবা যায় না। এটা আমাদের সব পুজোপ্রেমীদের কাছে একটা বাড়তি পাওনা।’
ফোরাম-এর পূর্ব অঞ্চলের প্রধান প্রতীক চৌধুরী বলেছেন, ‘আনন্দবাজার অনলাইন এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এই ধরনের একটি ডিজিটাল মিডিয়ার সঙ্গে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব-এর যুক্ত হয়ে পড়া নিয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’
ফোরাম-এর উত্তর অঞ্চলের প্রধান অভিষেক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব-এর এই জড়িয়ে পড়া নিঃসন্দেহে একটি ভাল উদ্যোগ। কলকাতা শহরের নামী পুজো গুলির প্রচার তো হয়ই। কিন্তু যে পুজো গুলির প্রচার হয় না, তারা পিছনে পড়ে যায়। বিশেষত তাদের পুজোগুলিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এটি ভীষণ ভাল একটি পদক্ষেপ।’
ফোরাম-এর দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান সমীর ঘোষ বলেন, ‘ ফোরাম এখন কলকাতা শহরে একটা ছাতার মতো, যার নীচে বহু পুজো আছে। বর্তমানে ৪৮০টি ক্লাব রয়েছে এই ছাতায়, আশা করা যাচ্ছে পরবর্তীকালে সংখ্যাটি ১০০০ ছাপিয়ে যাবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক জেলার পুজো কমিটি ফোরাম-এ যুক্ত হয়েছে। ফোরাম-এর মুকুটে জুড়েছে নতুন পালক। পাশাপাশি এই বছর আনন্দবাজার অন লাইনের সঙ্গে ফোরাম-এর এই যৌথ উদ্যোগ আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা। আনন্দবাজারের হাত ধরে ফোরাম-এর কার্যবিধি থেকে পুজো সংক্রান্ত আরও নানান খবর মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।’
এই প্রসঙ্গে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “এই প্রথম বছর ফোরামের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।” এই ধরনের উদ্যোগের জন্য তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত আশাবাদী আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোরামের এই অ্যাসোসিয়েশন নিঃসন্দেহে বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে আরও অনেক বেশি গৌরবান্বিত করে তুলবে।
অন্য দিকে সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “ফোরাম সারা কলকাতায় পুজো উদ্যোক্তাদের একটি মিলিত মঞ্চ; ছোট-বড় পুজোরই একটি অন্যতম প্রধান সংগঠন হিসেবে ফোরাম সুপরিচিত। আবার, সংবাদ জগতে আনন্দবাজার পত্রিকাও অন্যতম বড় নাম। এই দুই সংস্থার মিলিত উদ্যোগ যখন কলকাতার পুজোকে ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে চাইছে,তখন এই বছরের পুজো আরও ভাল ভাবে বিশ্বের দরবারে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে।”
পার্থ ঘোষ জানাচ্ছেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ ছিল ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সঙ্গে থাকা সব ছোট বড় পুজো যেন আনন্দবাজার অনলাইনের মঞ্চে নিজেদের স্থান পায়। সব ক্লাবের পুজোই যেন এগিয়ে আসতে পারে। এই উদ্যোগ বিগত দু-তিন বছর করোনা মহামারি চলাকালীন সময়ে পুজোর যে আনন্দে ভাটা পড়েছিল, তা নিঃসন্দেহে কেটে যাবে।”
আবার অঞ্জন উকিল জানিয়েছেন, “ফোরামের সঙ্গে প্রায় ৪৫০টি পুজো রয়েছে। এর মধ্যে অনেক সময়ই স্বল্প বাজেটের পুজোগুলি প্রচারের আলোয় আসতে পারে না। বড় পুজোগুলি নিজেদের পুজোর প্রচারের জন্য অনেক টাকা ব্যয় করতে পারেন, কিন্তু স্বল্প বাজেটের ছোট পুজোগুলির পক্ষে তা সম্ভব হয় না। ফোরামের সঙ্গে আনন্দবাজারের অনলাইনের এই গাঁটছড়া বাধার কারণে ছোট বড় সকল ক্লাব নিজেদের পুজোকে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছে। কম বাজেটের পুজোতেও অনেক ভাল ভাল কাজ হয়।অনেকের নতুন ভাবনা থাকে, এই মেলবন্ধনের জন্য তাঁরা নিজেদের ভাবনাকে মেলে ধরার মঞ্চ পাবেন, তাই এটি একটি দারুণ উদ্যোগ।”