—ফাইল চিত্র।
অবশেষে চাকরিতে যোগ দিলেন অনামিকা রায়। তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘গড়িমসি’ করায় বুধবার পর্ষদের কড়া সমালোচনা করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, তার কয়েক ঘণ্টা পরেই হাতে নিয়োগপত্র পান শিলিগুড়ির ওই চাকরিপ্রার্থী। এর পর বৃহস্পতিবারই শিলিগুড়ির কাছে আমবাড়ির হরিহর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। গোটা প্রক্রিয়া শেষে অনামিকা বলেন, ‘‘খানিকটা চিন্তায় ছিলাম। হাতে নিয়োগপত্র পেলেও শিক্ষা দফতর সংশ্লিষ্ট স্কুলকে যত ক্ষণ না নির্দেশ দিচ্ছে, তত ক্ষণ তো স্কুল আমায় নিয়োগ করবে না। কাজেই পুলিশ ভেরিফিকেশন (যাচাইপর্ব)-এর বিষয়টা মাথায় রেখে খানিকটা চিন্তায় ছিলাম। তবে গতকাল (বুধবার) রাতে ফোন করে নিয়োগের কথা বলা হয়। স্কুলকেও নির্দেশ দিয়েছে। আজ নথিপত্র জমা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হল। আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার থেকে আমি ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে পারব। আমার স্বপ্ন পূরণ হল।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর আইনজীবীকেও ধন্যবাদ জানান অনামিকা।
অনামিকাকে নিয়োগপত্র দেওয়ায় কেন এত বিলম্ব হয়েছে, এই গড়িমসির জন্য দায়ী কে, এই প্রশ্ন তুলে বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিবের কাছে হলফনামা তলব করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পর্ষদের মানসিকতার সমালোচনা করে বিচারপতি মন্তব্য, ‘‘এরা অধিকাংশ সময়েই মানুষকে হয়রান করে।’’ গত সোমবার হাই কোর্টে অনামিকার আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশের পরেও অনামিকাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট’ই পাঠায়নি শিলিগুড়ি কমিশনারেট। তার পরেই পুলিশের হলফনামা তলব করেন বিচারপতি। ঘটনাচক্রে, সে দিন রাতেই পর্ষদ জানায় যে, অনামিকার নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। এত দ্রুত কী ভাবে কাজ হল তা নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। এর পর বুধবার বিচারপতির কড়া বার্তার ঠিক পরেই পর্ষদ থেকে নিয়োগপত্র পান অনামিকা।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী কোচবিহারের একটি স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন। অবৈধ নিয়োগে তাঁর চাকরি বাতিল করে ববিতা সরকার নামে এক জনকে চাকরি দেয় হাই কোর্ট। কিন্তু আদালতে ঠিক তথ্য না দেওয়ায় ববিতার চাকরি বাতিল হয় এবং অনামিকা চাকরি পান। পারিবারিক পরিস্থিতি বিচার করে তাঁকে বাড়ির অদূরের কোনও স্কুলে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।