জেনিভায় হু-র সদর দফতরের সামনে শ্যামসুন্দর নন্দী। নিজস্ব চিত্র
পোলিয়োকে পুরোপুরি নির্মূল করতে নতুন পথের সন্ধান দিলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর মুম্বই ইউনিটের সহ-অধিকর্তা শ্যামসুন্দর নন্দীর গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক প্রকাশনা, ‘জার্নাল অফ মেডিক্যাল ভাইরোলজি’-তে ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সদর দফতর, সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনিভাতেও নিজের কাজের কথা তুলে ধরেছেন তিনি।
পুরুলিয়ার পুঞ্চা ব্লকের ন’পাড়া হাই স্কুলে পড়াশোনা করা শ্যামসুন্দর জানান, ২০১১-র ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশে শেষ পোলিয়ো সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছিল। হাওড়ার পাঁচলার এক শিশু পোলিয়োর কারণে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। তার পরে, ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতকে ‘পোলিয়োমুক্ত’ ঘোষণা করে। তাঁর কথায়, “তবে সম্প্রতি অন্য কয়েকটি দেশের পাশাপাশি কলকাতা, দিল্লি, জয়পুর, বেঙ্গালুরুতে নিকাশির জলে ভ্যাকসিন ডিরাইভড বা টিকা থেকে নিষ্কাশিত পোলিয়ো ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে।” ‘জিনোম এডিটিং’-এর অত্যাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি তাঁর ‘সেল লাইন’ বিশ্বকে পোলিয়োমুক্ত করতে সহায়তা করবে, দাবি তাঁর।
এর আগে ‘সিলিকোসিস’ নির্ণয়ের কিট আবিষ্কার করে প্রচারে আসেন শ্যামসুন্দর। তাঁর তৈরি করোনা নির্ণয়ের দু’টি কিটও ‘আইসিএমআর’-এর অনুমোদন পেয়েছে। কী ভাবে মিলল সাফল্য? শ্যামসুন্দর বলেন, “২০১৭ সালে আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক ওই ‘সিআরআইএসপিআর ক্যাস-৯’ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করি। তবে তা ছিল অন্য সেল লাইন নিয়ে। সে পথে হেঁটে পোলিয়ো নির্মূলের পথের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।” তিনি আরও জানান, সম্প্রতি জেনিভায় নন-পোলিয়ো অ্যান্টেরোভাইরাস নিয়ে কাজ হয়, এমন ১৪৬টি দেশের বিজ্ঞানীদের সামনে গবেষণাপত্রটি তুলে ধরেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওই দেশগুলিতে তাঁর কাজ পাঠানোর জন্য ‘আইসিএমআর’-এর সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছে বলেও জানান শ্যামসুন্দর।