—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এক অভিযুক্ত তানভির ভুঁইয়া। মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে জবানবন্দি দেয় কলকাতা থেকে ঢাকা ফিরে গ্রেফতার হওয়া তানভির। জবানবন্দিতে তানভিরের দাবি, সাংসদকে শ্বাসরোধ করে খুনে অংশ নেয় সে। সাংসদের মুখে সে-ই বালিশ চাপা দেয়। এর আগে সোমবার ঢাকার এই আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিল আর এক অভিযুক্ত তরুণী শিলাস্তি রহমান।
সোমবার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে শিলাস্তি খুনের সময়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকার কথা স্বীকার করলেও খুনে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। শিলাস্তির দাবি, আজিমকে খুনের আগে তাঁর সঙ্গীরা নিউ মার্কেট থেকে পলিথিনের বড় প্যাকেট-সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনে। এ সব জিনিস কেনার কারণ জানতে চাইলে তাকে বলা হয়েছিল, ভারতে এই সব জিনিসের মান বাংলাদেশের থেকে ভাল। তাই কেনা হচ্ছে।
নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে সাংসদকে খুনের অভিযোগে বাংলাদেশের পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার
করেছে তিন অভিযুক্ত শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লা আমান, তানভির এবং শিলাস্তিকে। তানভির সম্পর্কে আমানের ভাইপো। সূত্রের খবর, তানভিরের জবানবন্দি থেকে জানা গিয়েছে, বেনাপোল দিয়ে ৬ মে কলকাতায় এসে
নিউ টাউনের কাছাকাছি একটি হোটেলে ওঠে সে।
আজিম খুনের মূল চক্রী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন, তাঁর বান্ধবী শিলাস্তি এবং আমান ৩০ এপ্রিল কলকাতায় এসে নিউ টাউনে শাহিনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ওঠে। সাংসদকে খুনের আগেই ভারত ছাড়ে শাহিন। অভিযোগ, ১৩ মে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটেই খুন করা হয় বাংলাদেশের সাংসদকে। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, খুনের সময় ফ্ল্যাটে ছিল শিলাস্তি, তানভির, আমান, ফয়সাল, সিয়াম হোসেন এবং কসাই জিহাদ হাওলাদার।
এই খুনের ঘটনার আর এক অভিযুক্ত জিহাদকে বনগাঁ থেকে গ্রেফতার করার দাবি করেছে সিআইডি। জিহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাংসদকে খুনের পরে পেশায় কসাই জিহাদই তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে।
আলাদা করে হাড়-মাংস। জিহাদকে জেরা করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, সাংসদের ওই দেহাংশ প্লাস্টিকে করে একটি ট্রলি ব্যাগে ভরে ভাঙড়ের বাগজোলা খালে ফেলে দেওয়া হয়। তবে নৌসেনার সাহায্য নিয়ে বাগজোলা খালে তল্লাশি চালিয়েও দেহাংশ পায়নি সিআইডি। নিউ টাউনের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসপিণ্ড মানুষের কি না জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। সাংসদের মাথা এবং হাড়ের খোঁজে বাগজোলা খালে তল্লাশি চালাচ্ছে সিআইডি। বুধবার পর্যন্ত সে কাজে সাফল্য় মেলেনি।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের দাবি, সিয়ামকে নেপালে গ্রেফতার করেছে সে দেশের পুলিশ। তাঁকে বাংলাদেশে ফেরাতে নেপালে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দারা। তাঁরা ঢাকায় ফিরলেও সিয়ামকে ফেরানোর ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেননি। রাজ্য পুলিশও সিয়ামকে নিজেদের হেফাজতে চাইছে।