জঙ্গলমহল নামেই পরিচিতি বেশি। কিন্তু দু’বছরের সময়সীমার মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে অরণ্যের পরিমাণ কমেছে ১৯%! উত্তরের দার্জিলিঙেও অরণ্য কমেছে ১১ শতাংশ! ২০১৫ সালের তথ্যের সঙ্গে ২০১৭ সালের তথ্যের তুলনামূলক সমীক্ষা করে এই রিপোর্টই প্রকাশ করেছে ফরেস্ট সার্ভে অব ইন্ডিয়া। শুধু তাই নয়, তাদের সমীক্ষা বলছে, এ রাজ্যে নথিভুক্ত অরণ্যাঞ্চল ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ২% কমেছে।
পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণপ্রেমীরা বলছেন, এমনিতেই এ রাজ্যে অরণ্য এলাকা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই কম। তার উপরেও যদি এ ভাবে অরণ্য কমতে থাকে, তা হলে তো সমস্যা আরও বাড়বে। এক দিকে বন্যপ্রাণীরা যেমন আশ্রয় হারাবে, তেমনই বাতাসে কার্বনের পরিমাণ বাড়বে। নথিভুক্ত অরণ্যাঞ্চলের মধ্যে রিজার্ভ ফরেস্টগুলিও রয়েছে। ফলে সেখানে জঙ্গল কমে যাওয়ায় বিষয়টি জীববৈচিত্র এবং পরিবেশের দিক থেকে আশঙ্কা তৈরি করেছে। ফলে ঘন জঙ্গল কমেছে, এটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা।
এই তথ্য মেনে নিচ্ছেন বনকর্তাদের একাংশও। তাঁরা বলছেন, কয়েকটি জঙ্গলের মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। কিছু এলাকায় নতুন চারা লাগানো হলেও সেগুলি বাঁচেনি। কিছু এলাকায় চোরাকারবার হয়েছে। এক শীর্ষ বনকর্তা বলছেন, ‘‘দার্জিলিঙের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সুযোগে বেশ কিছু চোরাকারবারি গাছ কেটেছিল। কিছু এলাকায় উন্নয়নের জন্য গাছ কাটা পড়েছে।’’ বনকর্তাদের একাংশের এ-ও বক্তব্য, বন দফতরে পর্যাপ্ত কর্মী নেই। তার ফলে নতুন চারা লাগানো বা অরণ্য রক্ষায় নজরদারি যথাযথ হচ্ছে না। প্রাকৃতিক নিয়মে কিছু গাছ পড়ে যায় বা নষ্ট হয়। তাই অরণ্যে সব সময়েই নতুন চারা লাগাতে হয়। সেই চারা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কর্মী নেই।
রাজ্য বন দফতরের দাবি, পুরুলিয়া, বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ওই দুই বছরের মধ্যে অরণ্যের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে কাজ একেবারেই হয়নি, সে কথা ঠিক নয়। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলছেন, ‘‘কিছু জেলায় অরণ্যের পরিমাণ কমতে পারে। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে আমাদের রাজ্যে অরণ্য বেড়েছে।’’