ফাইল চিত্র।
শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফর। কলকাতায় তাঁর এসে পৌঁছনোর কথা ছিল শুক্রবার রাতে। তার কিছু ক্ষণ আগেই বিজেপির তরফে জানানো হয়, এ যাত্রায় আসছেন না শাহ। রাজ্যে আজ, শনি ও কাল, রবিবার তাঁর যাবতীয় কর্মসূচিই আপাতত বাতিল হয়েছে। দিল্লিতে এ দিন সন্ধ্যার বিস্ফোরণের ঘটনার জেরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বাতিল হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের বক্তব্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য শুধু বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণে শাহের আজকের যাবতীয় কর্মসূচি স্থগিত করা হচ্ছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন রাতে বলেন, ‘‘অমিত শাহ দু’দিনের সফরে রাজ্যে আসছেন না বলে আমাদের জানানো হয়েছে। দিল্লিতে একটা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টা স্পর্শকাতর। সেই জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি ছাড়ছেন না। তবে রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলায় আমাদের যোগদান মেলা হবে। অন্য কোনও নেতা দিল্লি থেকে সেখানে আসবেন। কে আসবেন, আমাদের এখনও জানানো হয়নি।’’
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডাকে হাওড়ার সভার জন্য নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নাম নিয়েও চর্চা হচ্ছে। তবে কোনও কিছুই এ দিন রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত নয়। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেছেন, ‘‘কে আসবেন, এখনও বলা যাচ্ছে না। দিল্লিই ঠিক করবে, কে আসবেন। হয়তো আগামী কাল আমাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
এর আগে দিল্লিতে হিংসার ঘটনার সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের ‘ব্যর্থতা’র দিকে আঙুল উঠেছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামতে হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, এ বার কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে দিল্লিতে অশান্তি এবং তার দিনকয়েকের মধ্যে ইজরায়েলি দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিকালের ওই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও এপিজে আব্দুল কালাম রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ওই বিস্ফোরণের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহর জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে আর ঝুঁকি নিতে চান না বলেই শাহ আপাতত দিল্লি না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাতে কলকাতায় পৌঁছে আজ মায়াপুর এবং ঠাকুরনগরে মতুয়া এলাকায় সভা করতে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল শাহের। দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের সঙ্গে শাহের বৈঠকও নির্ধারিত ছিল আজ। পর দিন, রবিবার তাঁর সফর-সূচিতে ছিল কলকাতায় অরবিন্দের বাড়ি, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং বেলুড় মঠ। তার পরে ডুমুরজলার সভা, যেখানে তৃণমূল থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষাল, রথীন চক্রবর্তীদের গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা। শাহ না আসায় অন্য সব কর্মসূচিই বাতিল হচ্ছে। তবে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের যোগদানের অনুষ্ঠানের ‘গুরুত্ব’ বোঝাতে শাহের পরিবর্তে অন্য কোনও ওজনদার নেতাকে ডুমুরজলায় আনার চেষ্টা হচ্ছে বিজেপির তরফে।