ছবি: এএফপি।
কার্যত শংসাপত্র দিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ‘‘পশ্চিমবঙ্গ এখন শান্ত।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে অসম ও পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ শুরু হলেও, দু’রাজ্যেই পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক বলে মঙ্গলবার দাবি করলেন অমিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, মোটের উপর দেশের পরিস্থিতি শান্ত। অসম, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে অশান্তি এ বার দিল্লিতে ছড়ানোর যুক্তি মানতে রাজি হননি তিনি। বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি আয়ত্তে রয়েছে। অসমে ক’দিন ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু আইনটি প্রসঙ্গে সঠিক প্রচার চালানো পরে তা থেমে যায়। একই ভাবে অশান্তির আগুন ছড়িয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এখন শান্ত।’’
পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভের আঁচ থিতিয়ে এলেও রাজ্য প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিচ্ছে না। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে যে চাপা অসন্তোষ রয়েছে তা অনুমান করে মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলার অন্তত ৮০টি গ্রামীণ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা পুলিশ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিপুর ও তার লাগোয়া ওই গ্রামগুলিতে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। রবিবার, ওই এলাকায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধে বোমা পড়েছিল মুড়ি-মুড়কির মতো। অভিযোগ, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে গুলিও চালাতে হয়েছিল। অশান্তির আশঙ্কায় এ দিন তাই জঙ্গিপুরের ওই এলাকায় রাতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মমতার প্রশ্ন, আমরা কারা? ভিড় বলল ‘নাগরিক’
রাজ্য ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরলেও নয়া আইন নিয়ে উদ্বেগ কতটা গভীর, মুর্শিদাবাদে আরও একটি মৃত্যুর ঘটনাকে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত বলে দাবি প্রশাসনের। হরিহরপাড়ার বিলপাড়া গ্রামে নজরুল মিঁয়া (৫৯) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার। পরিবার জানিয়েছে, অসমে এনআরসি নিয়ে তৎপরতা শুরু হতেই নিজের জমি-বাড়ির হারানো দলিলের খোঁজ করছিলেন তিনি। এ দিন সেই দলিলের খোঁজেই যান স্থানীয় ব্লক অফিসে। কিন্তু বিশেষ কিছুই পাননি। পরিবারের দাবি, বাড়িতে ফিরে হা-হুতাশ করছিলেন। এর পরেই হদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। স্ত্রী রমেলা বিবি বলেন, ‘‘সারা দিন একটাই কথা ছিল, নয়া আইন বলবৎ হলে কোথায় যাব! এই চিন্তা করতে করতেই আমাদের ছেড়ে চলে গেল ও।’’