মনমোহন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে কালো পতাকা দেখালেন বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা। পরে জেএনইউ-এর উপাচার্যকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর অনুরোধ করল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে যেন কড়া পদক্ষেপ না করা হয়। ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে ২০০৫ সালের ওই ঘটনা সম্পর্কে মনমোহন
সিংহের এই অবস্থানের কথা বলেছিলেন জেএনইউয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বি বি ভট্টাচার্য।
জওহরলাল নেহরুর মূর্তি উন্মোচন করতে জেএনইউয়ে গিয়েছিলেন মনমোহন। পড়ুয়াদের বিক্ষোভের পরে বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত যে কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্য হতে চান তবে তাঁকে ভোলত্যেরের (ফরাসি লেখক) একটি বক্তব্য মনে রাখতে হবে। ভোলত্যের বলেছিলেন, কারও বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত না হতে পারি। কিন্তু তার সেই বক্তব্য পেশের অধিকারকে আমি আমৃত্যু সমর্থন করব। উদারতায় বিশ্বাসী যে কোনও প্রতিষ্ঠানের এটাই ভিত্তি হওয়া উচিত।’’
মনমোহনকে কালো পতাকা দেখানোর পরে বিক্ষোভকারীদের কয়েক জনকে দিল্লি পুলিশ আটক করে। বিক্ষোভকারীদের কারণ দর্শানোর নোটিসও পাঠান জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। প্রাক্তন উপাচার্য ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আমায় পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করতে অনুরোধ করা হয়। বলা হয়, বিক্ষোভ দেখানো পড়ুয়াদের অধিকার। আমি বলি ওদের সতর্ক করা প্রয়োজন। এর পরে ওদের সতর্ক করা হয়। আর কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’
২০১৬ সাল থেকে মোদী সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে বারবার উত্তাল
হয়েছে জেএনইউ ক্যাম্পাস। উমর খালিদ-সহ বহু ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ-সহ নানা কড়া ধারায় মামলা করা হয়। এখনও জেলেই রয়েছেন খালিদ। কিন্তু ২০২০ সালে সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে ২০০৫ সালের ঘটনা নিয়ে প্রাক্তন উপাচার্যের বক্তব্যকেই সমর্থন করেছিলেন তিনি। দুই জমানার এই পার্থক্য পরিবর্তিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির চিত্র বলে মত রাজনীতিকদের একাংশের। আর প্রাক্তন উপাচার্য ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এখন পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগের পথটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’