রাজ্য বিজেপিকে কড়া বার্তা অমিত শাহের। — ফাইল চিত্র
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বিজেপির পক্ষে হাওয়া থাকলেও তার উপরে নির্ভর করে বসে থাকলে চলবে না। জোর দিতে হবে বুথ স্তরের সংগঠনে। শনিবার নির্বাচনী কৌশল নিয়ে বৈঠকে বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বকে এমনই বার্তা দিয়ে গেলেন অমিত শাহ। অমিতের নির্দেশ, আরও বেশি করে চালিয়ে যেতে হবে জনসংযোগ কর্মসূচি, যেতে হবে বাড়ি বাড়ি। বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যে যে বিজেপির পক্ষে একটা হাওয়া তৈরি হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন অমিত। কিন্তু সেই সঙ্গে সতর্ক করেছেন, মজবুত সংগঠন না থাকলে হাওয়া যতই থাক তা কাজে লাগানো যাবে না। মজবুত সংগঠনের পাশাপাশি, সংগঠন পরিচালনার জন্য সঠিক কৌশল মেনে চলার উপরও অমিত গুরুত্ব দিতে বলেছেন বৈঠকে উপস্থিত দলীয় নেতাদের। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে রাতের এই বৈঠকে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। ছিলেন বাংলার দায়িত্ব থাকা ভিনরাজ্যের নেতারাও।
রাজনীতির হাওয়া মোরগ সব সময় ঠিক কথা বলে না। পোড়খাওয়া রাজনীতিক অমিত সেটা ভালভাবেই জানেন। আর সেটাই অমিত স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য বিজেপির এক নেতা। বুথ স্তরের সংগঠনের উপরে জোর দেওয়ার কথা এই প্রথম নয়, আগেও বলেছেন অমিত। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, অমিতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই বাংলার প্রতিটি বুথে কমিটি গড়া হচ্ছে। চার-পাঁচটি বুথ নিয়ে গঠন করা হচ্ছে একটি করে ‘শক্তিকেন্দ্র’ও। এ ছাড়া বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ধরে প্রচার কৌশল ঠিক করা হচ্ছে। শনিবার রাতে রাজারহাটের হোটেলে হওয়া বৈঠকে কোথায় কেমন কাজ হচ্ছে তার খোঁজ নেন অমিত। সে সব জানার পরেও আরও বেশি করে সংগঠনে জোর দেওয়ার কথাই বলেছেন। জানিয়েছেন ওই রাজ্য নেতা।
শনিবারই মেদিনীপুরে অমিতের জনসভায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিভিন্ন দল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন আরও অনেকে, যাঁদের মধ্যে ১ সাংসদ এবং ৯ বিধায়ক। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন আরও অনেকে দলে যোগ দেবেন বলে দাবি করছে বিজেপি। বিজেপির পক্ষে যে হাওয়া তৈরি হচ্ছে তাতে দলের নেতা-কর্মীরা আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে পারেন, সেই আশঙ্কা থেকেই শনিবারের বৈঠকে অমিত বারবার সতর্ক করেছেন বলে মনে করছেন রাজ্য নেতারা।
অমিত নিজেও এখন থেকে ঘনঘন বাংলায় আসবেন। রবিবার সকালে কলকাতায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘প্রতি মাসেই বাংলায় আসবেন অমিত। এ বার দু’দিনের সফর করলেন। এর পরে এসে সাত দিন পর্যন্ত থাকবেন।’’
শুধু রাজ্য নেতাদের উপরে ভরসা না করে নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও ভিনরাজ্যের নেতাকে বাংলার দায়িত্ব দিয়েছেন অমিত। তবে সেনাপতির ভূমিকাতে যে তিনিই থাকবেন তাও দিলীপের কথায় স্পষ্ট। সেই সঙ্গে শনিবারের বৈঠকে অমিত বুঝিয়ে দিয়েছেন সংগঠনে জোর দিয়েই পালে লাগাতে হবে হাওয়া। তবেই গঙ্গাপারের নীলবাড়িতে ভিরতে পারে বিজেপির বিজয়তরী।