অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ছবি সংগৃহীত
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে তরজায় জড়ালেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। রবিবার কেন্দ্রকে সময় মতো পরিযায়ী-তথ্য না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন নির্মলা। সোমবার অমিতের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘তথ্য দিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণযোগ্য। কেন্দ্রের পেশ করা তথ্য ভুল এবং মিথ্যায় ভরা।’’
দেশজুড়ে পরিযায়ীদের গতিবিধি শুরু হওয়া ইস্তক কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে তাঁদের নিয়ে টানাপড়েন চলছে । রবিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গ সময়ে তথ্য দেয়নি বলে গরিব কল্যাণ রোজগার প্রকল্পের তালিকায় নেই রাজ্যের কোনও জেলা। দেশের ১১৬টি জেলা এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
সোমবার রাজ্যের অর্থমন্ত্রী জানান, গত ২৩ জুন কেন্দ্র চিঠি পাঠিয়েছিল জেলাভিত্তিক পরিযায়ীদের তথ্য চেয়ে। ওই দিনই সন্ধ্যায় কেন্দ্রের কাছে জেলাভিত্তিক তালিকা পাঠানো হয়েছিল। ২৫ জুন ফের চিঠি দিয়ে ব্লকভিত্তিক তথ্য চায় কেন্দ্র। সেই তালিকা ওই দিনেই কেন্দ্রকে পাঠানো হয়। অমিতের দাবি, ‘‘এতটা অসত্য বললেন? ২০ জেলার পরিযায়ী-তথ্য রাজ্যের কাছে আছে। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ।’’
গত ২০ জুন গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনার সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অমিত এ দিন দাবি করেছেন, রাজ্যে প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষকে ফেরানো হয়েছে। ‘স্কিল ম্যাপিং’ করে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার পরেও গরিব কল্যাণ যোজনা থেকে বাদ পড়া নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘পিএম কেয়ার-এ ন’হাজার কোটি টাকা আছে। তার অডিট হয় না। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল অডিট হয়। তার পরেও ট্রেনের ভাড়া কেন্দ্র দিতে পারল না? পরিযায়ীদের জন্য ৩০৯টি ট্রেনের পুরো টিকিট খরচ দিয়েছে রাজ্য।’’
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি-কাণ্ডে রাজভবনে বিজেপি
পিএম কিষাণ প্রকল্পে যোগ না দেওয়া নিয়ে রাজ্যের সমালোচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রের মতো রাজ্যের কৃষকবন্ধু প্রকল্প জমির পরিমাণভিত্তিক নয়। কৃষকের অকালমৃত্যু বাবদ ২ লক্ষ করে টাকা পেয়েছে ৯৪৪০ পরিবার। এই প্রকল্পে ২২৫৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। অমিতের প্রশ্ন, ‘‘ তাহলে কী করে বঞ্চিত হলেন কৃষকেরা?’’
করোনা পরিস্থিতিতেও এই তরজায় উঠে এসেছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। অমিতের অভিযোগ, সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসি-র মাধ্যমে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে দেশকে জেলে পরিণত করার চক্রান্ত করছে কেন্দ্র।