অমিত মিত্র। —ফাইল চিত্র।
তৃতীয় এনডিএ সরকারের প্রথম বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য ছিল কর্মসংস্থান। তা নিয়ে গত ২৩ জুলাইয়ের সেই বাজেটে কর্মসংস্থানমুখী একাধিক পথের ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। শনিবার কেন্দ্রের সেই দাবিকে কার্যত কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থ দফতরের প্রধান মুখ্য পরামর্শদাতা অমিত মিত্র বলেন, ‘‘মুষ্টিমেয় কয়েকটি রাজ্যকে সুবিধা করে দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর তত্ত্বগুলি বিনষ্ট করা হচ্ছে।’’ যদিও কেন্দ্রের দাবি, ঠিক পথে চলার কারণে দেশের অর্থনীতি মজবুত হচ্ছে।
অমিতের দাবি, দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। কর্মসংস্থানের সুনির্দিষ্ট দিশা দেখাতে পারেনি কেন্দ্র। অসংগঠিত ক্ষেত্রটি বাজেটে বঞ্চিত থেকে গিয়েছে। কৃষি শ্রমিকের সংখ্যাবৃদ্ধি হওয়ায় তাঁদের মজুরিও কমছে। তাঁর কথায়, “কর্মসংস্থানের সংখ্যা দেখাতে গিয়ে কেন্দ্র গৃহবধূ, সাময়িক নিয়োগ ও স্বনিযুক্তদেরও যুক্ত করে নিয়েছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার। কর্মসংস্থানের মানে কাজ করে মজুরি পাওয়া। গৃহবধূরা কি সেটা পান? বাজেটে কর্মসংস্থান নিয়ে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে।”
যদিও বিরোধীদের প্রশ্ন, এ রাজ্যেও বড় মাপের শিল্প-বিনিয়োগ হচ্ছে না। তার পরেও কর্মসংস্থানের দাবি রাজ্য কী ভাবে করছে? অমিতের দাবি, “কেন্দ্রের তুলনায় রাজ্যে বেকারত্বের হার ৩ শতাংশ কম। রাজ্য সরকার মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিচ্ছে। তাতে চাহিদা তৈরি হচ্ছে বাজারে এবং তার ভিত্তিতে উৎপাদন ও নিয়োগের সম্ভাবনা বাড়ছে।”
কেন্দ্রীয় বাজেটের ‘ইন্টার্ন’ প্রকল্পকে কটাক্ষ করে এ দিন অমিত দাবি করেন, পাঁচশো বড় সংস্থার পক্ষে ২০ লক্ষ লোককে ১২ মাসের জন্য ‘ইন্টার্ন’ হিসেবে নিয়োগ করাও কার্যত অসম্ভব। তাঁর বক্তব্য, ‘‘১২ মাস ইন্টার্নশিপের শেষে ওই যুবক-যুবতীরা কী করবেন? আর একটা অগ্নিবীর হবে!’’ তাঁর অভিযোগ, অসংগঠিত ক্ষেত্রেও প্রায় ১.৬ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। নিয়মিত কর্মীদের আয় কমেছে। অমিতের বক্তব্য, ‘‘যোজনা কমিশনের সময়েও যুক্তরাষ্ট্রীয় তত্ত্বের কিছু অবশিষ্ট ছিল। নীতি আয়োগে কিছুই নেই।’’ কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি, মানুষের হাতে টাকা পাঠিয়ে খয়রাতির রাজনীতি করা হয়নি। পরিকাঠামোয় জোর দেওয়ায় অতিমারির পরেও দেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে।