অমিত মিত্র। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব রাজ্য সরকার। যা নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্নাও চালাচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। শনিবার একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি পদক্ষেপ’-এর অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। তবে বিরোধীদের প্রশ্ন, বেআইনি পদক্ষেপ হয়ে থাকলে আদালতের দ্বারস্থ কেন হচ্ছে না রাজ্য!
তাঁর অভিযোগ, ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বাকি ৬৯০৭ কোটি টাকা। নিয়ম অনুযায়ী ২৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে টাকা বন্ধ করতে হয়, কিন্তু কেন্দ্র পদ্ধতি না মেনেই তা বন্ধ করেছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। পরে ২০২২ সালের মার্চে সেই ধারা প্রয়োগ করে তারা। অমিতের কথায়, “যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং গণতন্ত্র ধ্বংস করা হচ্ছে। আইনের তোয়াক্কা করেনি কেন্দ্র। জব কার্ড থাকা প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবিকায় ধাক্কা দিয়েছে।”
কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি এ দিন বলেন, “আমরা টাকা দেওয়ার জন্য বসে আছি। অনেক রাজ্যেই তো বিজেপি বিরোধী সরকার আছে। কোথাও তো এই অভিযোগ নেই।” কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সাংবিধানিক ভাবে অন্যায় হয়ে থাকলে রাজ্য সরকার কি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে? সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বলেন, “বেআইনি ভাবে টাকা আটকে রাখা হয়েছে বলে রাজ্যের শাসকদল যে অভিযোগ করছে, তারা এটার সমাধান চাইলে আলোচনা করুক। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কলকাতায় বলেছেন, তিনি দেখা করতে তৈরি। তা হলে নথি নিয়ে তাঁর থেকে প্রশ্নের জবাব চাওয়া দরকার। তা না চাইলে আদালতে যান। কোনও কিছু না করে ২০২৪ পর্যন্ত জিইয়ে রাখতে চাইলে এই চাপানউতোর চলতেই থাকবে।” এ দিন অমিত অবশ্য বলেন, “কয়েকটি এনজিও আদালতে গিয়েছে।”
গত প্রায় এক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী আবাস ও একশো দিনের কাজের প্রকল্প খতিয়ে দেখতে দফায় দফায় ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। তাদের সব রিপোর্ট অবশ্য এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজ্যকে এফআইআর করার সুপারিশ করেছিল কেন্দ্র। অমিতের দাবি, “ওরা চ্যালেঞ্জ করলে ওদেরই তা প্রমাণ করতে হবে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য, “কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এসে বলে গিয়েছে কোন রাজ্যে কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, কে কে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য টাকা উদ্ধার করুক, দোষীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে বলুক, ভুয়ো জব কার্ড বাতিল করুক। আমরা টাকা দেওয়ার জন্য তৈরি।”
অমিতের দাবি, ৫ অক্টোবর তামিলনাড়ু, কেরল, তেলঙ্গনা, কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড এবং এ রাজ্যে খাদ্যমন্ত্রীর বাসভবনে একসঙ্গে হানা দিয়েছে ইডি। বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নথিভুক্তি থমকে রয়েছে। ২০ হাজার এনজিও-র লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। উল্টো দিকে আরএসএস-এর প্রভাবিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি কী ভাবে বিদেশি অনুদান পাচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিজেপির নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, “আরএসএস কখনও বাইরে থেকে অনুদান নেয় না। যাঁরা সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত থেকে বিভিন্ন অসরকারি সংস্থা চালান, তাঁরা পাই পয়সার
হিসাব দেন।”