ফের দাম বাড়ল পেঁয়াজের। —ফাইল চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল গোটা রাজ্য। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের এর মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়কপথও অনেক জায়গায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তার প্রভাব পণ্য পরিবহণে যে পড়তে পারে, তেমন আশঙ্কা করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার ফের পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর সেই আশঙ্কাতেই যেন সিলমোহর পড়ল।
গত কয়েক দিন আগেও কেজি প্রতি পেঁয়াজ ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল। এ দিন সকালে বিভিন্ন বাজারে সেই পেঁয়াজের দাম পৌঁছে গেল কোথাও ১৪০ টাকা তো কোথাও আবার ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা!
শীতের মরসুমে পেঁয়াজের এই আগুন দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। মহারাষ্ট্রের নাসিকের পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে এ রাজ্যে পেঁয়াজ পৌঁছচ্ছে না চাহিদা অনুযায়ী। তার জেরেই এই মূল্যবৃদ্ধি। এমনটাই জানাচ্ছেন কলকাতার ব্যবসায়ীরা। এ দিন শহরের বিভিন্ন বাজারে কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পাইকারি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। সরকার গঠিত টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য জানান, আগে পেঁয়াজের দামে হেরফের নিয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল। এখন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তার জেরেই পেঁয়াজের লরি রাজ্যে কম ঢুকছে। সে কারণে ফের পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়েছে। কোনও লরিচালকই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায়, ঝামেলার ভয়ে পেঁয়াজের লরি নিয়ে আসতে চাইছেন না। এই অচলাবস্থা না কাটলে পেঁয়াজের দাম কমবে না। দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় সুফল বাংলা স্টল ছাড়াও রেশন দোকান এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টল থেকে ৫৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, পরিবার প্রতি ১ কেজি করে পেঁয়াজ পাচ্ছেন না তারা। পেঁয়াজ আসছে না বলেও জানিয়ে দিচ্ছে রেশন দোকানগুলি। টাস্কফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনের তুলনায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণে বাজারে বাজারে অভিযান চলবে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’’
পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ময়দানে নামতে হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পথে নেমে হাল-হকিকত খতিয়ে দেখেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও। জেলায় জেলায় প্রশাসনিক কর্তারা অভিযান চালিয়েছেন। প্রতি দিন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ এবং টাস্ক ফোর্সের নজরদারি রয়েছে। তার পরেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দাম। এ সব নিয়েই ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।