—প্রতীকী চিত্র।
ভোটের আগে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের অন্দরে চাপানউতোর নতুন নয়। কিন্তু বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলার পরে রাজ্যের তিন আইপিএস অফিসারকে দিল্লিতে ডেপুটেশনে চেয়ে পাঠিয়েছে দিল্লি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সেই তলবের পরেই শুরু নতুন আলোচনা। প্রশাসনের অনেকে বলছেন, রাজ্যের পুলিশকর্তাদের এখন কার্যত ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থা। কারণ, রাজ্য সরকারের কথা না-শুনলে বদলির খাঁড়া নামতে পারে। আর রাজ্যের কথা শুনলে ওই তিন জনের মতো কেন্দ্রের কোপে পড়তে হতে পারে।
এ তো না হয় আইপিএস অফিসারদের সমস্যা। কিন্তু রাজ্যের হাতে থাকা পুলিশকর্মীদের সমস্যা কোথায়? পুলিশকর্মীরা বলছেন, রাজ্যে ভোটের হাওয়া যে ভাবে বইছে তাতে বিধানসভা ভোটের ফল কী হবে, তা নিয়ে নানা জল্পনা রয়েছে। ফলে পালাবদল হলে নতুন সরকারের কোপে পড়তে হবে। এখন থেকেই বিজেপি নেতারা পুলিশকে রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার আবার পালাবদল না-হলেও যে নিস্তার মিলবে, এমনও নয়। এই প্রসঙ্গে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের পরে বদলির উদাহরণ দিচ্ছেন অনেকে।
বস্তুত, সে বারই প্রথম কলকাতা পুলিশের একগুচ্ছ অফিসারকে বিশেষ কারণ দেখিয়ে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করা হয়েছিল। তাঁদের অনেকে এখনও কলকাতায় ফিরতে পারেননি। লালবাজারের অনেকেই বলছেন, বদলি হওয়া পুলিশকর্মীরা বিধানসভা ভোটে কোনও দলের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেননি। নির্বাচন কমিশনও তাঁদের কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও তো বদলি হতে হল! রাজ্য পুলিশের বহু থানার ওসিদের গুরুত্বহীন ও প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করা হয়েছিল।
সে বার নিস্তার পাননি আইপিএস অফিসারেরাও! কলকাতা পুলিশের তৎকালীন দুই ডিসি এবং এক যুগ্ম কমিশনারকে কম্পলসারি ওয়েটিংয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিল। বদলি করা হয়েছিল অন্য এক মহিলা ডিসিকে। “আর এ বার তো ভোটের দামামা বাজার আগে থেকেই কমিশন সক্রিয়, খড়্গহস্ত হয়ে রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক,” বলছেন এক আইপিএস কর্তা। তা হলে কী হবে?
এক প্রবীণ পুলিশকর্তার উক্তি, “ভোট পার্বণের বৈশাখেই তো এই হাল! আসছে আষাঢ় মাস, মন তাই ভাবছে, কী হয় কী হয়!”