ছবি: পিটিআই।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে একই বিমানে ফেরা চার জনের এখনও খোঁজ পেল না রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর! ওই চার জনের সঙ্গে যে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, দিল্লিকে তা জানানো হয়েছে বলে খবর। এ দিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে শনিবার পশ্চিম বর্ধমানের এক বাসিন্দার লালার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৫ জানুয়ারির পরে চিনের উহান থেকে এ দেশে ফিরেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
এ পর্যন্ত ভারতে এক জনেরই ‘নোভেল করোনাভাইরাস’ (সিএনওভি)-এ আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করতে পেরেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সিএনওভি-তে আক্রান্ত চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী গত ২৩ জানুয়ারি কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে কেরলে যান। কুনমিং থেকে যে বিমানে ওই ছাত্রী ফিরেছিলেন, তার ৫০ জন যাত্রীকে পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই যাত্রী-তালিকায় এ রাজ্যের ছ’জন রয়েছেন। বঙ্গবাসী হলেও সকলেই যে ভারতীয় নাগরিক, তা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চার জনের যা ঠিকানা রয়েছে, তা ধরে বাড়ি খোঁজা সম্ভব নয়। ফোন নম্বরেও গলদ রয়েছে।
ছ’জনের মধ্যে যে দু’জনের খোঁজ মিলেছে, তাঁদের এক জন গাঙ্গুলিবাগানের বাসিন্দা। শনিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দার নমুনা আসানসোলেই সংগ্রহ করা হয়।
চার জনের খোঁজ না পাওয়া নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই এ দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে এক মার্কিন নাগরিককে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সূত্রের খবর, মার্কো তুলিও নামে চব্বিশ বছরের ওই যুবক পার্ক স্ট্রিটে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাস চারেক আগে তাইল্যান্ড থেকে ওই যুবক ভারতে এসেছিলেন। তাইল্যান্ড-যোগ শোনা মাত্র পার্ক স্ট্রিটের একটি মিশনারি সংস্থা মার্কোকে আইডি-তে নিয়ে আসে। তড়িঘড়ি তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই যুবকের করোনাভাইরাসের লক্ষণ নেই। সম্ভবত ডায়রিয়ার জেরে অসুস্থ বোধ করছিলেন।’’ রাতে তাঁকে ছাড়া হয়।
এ দিন কলকাতার পাঁচটি এবং সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার, মেডিসিন ও সিসিইউ ইনচার্জদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। বৈঠকে হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড ও পৃথক সিসিইউ খোলার প্রয়োজন হলে, তা কোথায় হবে, ঠিক করতে বলা হয়। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে কি না, পরীক্ষা না করেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিনের তরুণ-তরুণীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পুনরাবৃত্তি আটকাতে কাদের পরীক্ষা করা দরকার, তা নিয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে বলা হয়। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ওই মেডিক্যাল কলেজগুলিতেই যাতে নমুনা সংগ্রহ করা যায়, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।