প্রতীকী চিত্র
অন্ধকারে চুপিসারে দেহ কবর দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার আন্দুল রোডের একটি কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ওই প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে সন্দেহ করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে সেই গোলমাল। অবশেষে দফায় দফায় পুলিশকে লাঠি চালাতে হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হন বেশ কয়েক জন। এমনকি, পুলিশ বিভিন্ন আবাসনে গিয়ে দরজায় লাথি মেরেছে বলেও স্থানীয়দের একটি অংশ অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও এই সব অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ১৩ তারিখ জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ এবং সাঁকরাইলের ধূলাগড় এলাকার সিপিএম নেতা বাসারত মোল্লা হজ করে দুবাই থেকে বাড়ি ফেরেন। এর পরেই তাঁর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। গত মঙ্গলবার তাঁকে সত্যবালা আইডি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ভর্তি করে নেন। বৃহস্পতিবার সকালেই পরীক্ষার
জন্য তাঁর লালারসের নমুনা পাঠানো হয়। রিপোর্ট আসার আগে ওই রাতে বছর ষাটের প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার সারা দিন দেহটি হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছিল।
মৃতের ছেলে ইন্দিনহান মোল্লা শনিবার জানান, জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে বাবাকে নিয়ে সত্যবালা আইডি হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। সেখানে যাওয়ার পরপরই করোনা সন্দেহে ভর্তি করে নেওয়া হয় প্রৌঢ়কে। যদিও পরীক্ষা না-করে অন্য রোগীর সঙ্গেই প্রায় দু'দিন ধরে তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে ছেলের অভিযোগ। ঠিক মতো চিকিৎসা শুরুর আগেই বাবার মৃত্যু হয় বলে জানাচ্ছেন তিনি। ওই যুবক বলেন, “বাবার মৃত্যুর পরে মা-সহ পরিবারের সবাইকে ওই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছে। বাবার চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট আমরা পাইনি।”
গোটা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করা হয় জেলা সিপিএম এবং বিজেপির তরফে। হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘ওই প্রৌঢ়ের সঙ্গে আরও ৪০ জন দুবাই থেকে ফিরেছিলেন। অথচ তাঁদের কোয়রান্টিনে রাখার কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি!’’ হাওড়া জেলার বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘ওই পরিবারটিকে প্রৌঢ়ের মৃত্যুর শংসাপত্র পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।”
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে হেতু সত্যবালা আইডি হাসপাতালে ওই প্রৌঢ় ভর্তি ছিলেন, তাই করোনা ধরে নিয়ে নির্দেশিকা মেনেই দেহটি কবর দেওয়া হয়েছে। কবরস্থানে স্থানীয়েরা বিক্ষোভ দেখালে তাঁদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ লাঠি চালায়নি।’’