বালুরঘাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের খাসতালুকে মিঠুনের পুজো উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল। ফাইল ছবি
যত কাণ্ড মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে।
বালুরঘাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের খাসতালুকে মিঠুনের পুজো উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ, সেই সফরে বালুরঘাটের সার্কিট হাউসে তিনি ‘জায়গা’ পাননি। বিজেপির তরফে দাবি, আবেদন করা হলেও, ‘ইচ্ছাকৃত’ তাদের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীকে বালুরঘাটে সার্কিট হাউসে রাখার অনুমতি প্রশাসন দেয়নি। আজ, রবিবার সুকান্তের সঙ্গে বালুরঘাটের একটি ক্লাবের পুজো উদ্বোধন করার কথা তাঁর। সেখানে দলীয় সভাতেও থাকার কথা মিঠুনের। কিন্তু তার আগে, শনিবার মিঠুনের সার্কিট হাউসে থাকার অনুমতি না মেলার ব্যাপারে শোরগোল শুরু হয়। এ নিয়ে সুকান্তর মন্তব্য, ‘‘বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ। তৃণমূলের অঙ্গুলিহেলনে প্রশাসন তাঁকে ঘর দিতে চায়নি।’’
অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, উনি সম্ভবত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আসছেন। সরকারি অনুষ্ঠানে এলে সার্কিট হাউসে থাকার প্রশ্ন ওঠে। মন্তব্য করেননি জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ। মিঠুন বলেন, ‘‘দলের কাজে এসে দল আমায় যেখানে রাখে, সেখানেই থাকি। এ বারেও তাই হবে।’’
যে ক্লাবের পুজো উদ্বোধন করতে যাবেন মিঠুন, তার সম্পাদক তথা বিজেপি সমর্থক অরজিৎ মোহান্তের দাবি, মিঠুনের জন্য সার্কিট হাউসে ঘর ‘বুক’ করতে চেয়ে আবেদন করার তিন দিনের মাথায় তাঁকে জানানো হয়, আগাম ‘বুকিং’ রয়েছে সার্কিট হাউসে। তাই ঘর দেওয়া যাচ্ছে না। অরজিতের আরও দাবি, মিঠুন ও সুকান্তের কাটআউটও খুলতে হয়েছে তাঁদের। শহরের অন্য হোটেলেও ‘দাদার’ জন্য উপযুক্ত ঘর মেলেনি। যদিও স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য, বালুরঘাট শহরে সার্কিট হাউস বাদ দিলে মিঠুনের থাকার মতো হোটেল কার্যত নেই।
সুকান্তের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের মদতে প্রশাসন এবং হোটেল ব্যবসায়ীদের একাংশ ঘর দিতে নারাজ। এর ফলে বালুরঘাটের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘যত দূর জানি, মিঠুন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আসছেন। সরকারি কর্মসূচিতে এলে, সার্কিট হাউসে থাকার প্রশ্ন। দলেরই উচিত, তাঁকে ভাল কোনও জায়গায় রাখা।’’
বিষয়টি নিয়ে জানতে ফোন করা হলে ধরেননি জেলাশাসক। জবাব মেলেনি মেসেজের। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, আগে থেকে সার্কিট হাউসে রবিবারের বুকিং রয়েছে। তাই তা মিঠুনের জন্য বরাদ্দ করা যায়নি।
এ দিন কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকের সময়ে মিঠুন ফের দাবি করেন, এখনও তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের অন্তত ২১ জন বিধায়ক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। নেতা-মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রসঙ্গে মিঠুন বলেন, ‘‘এরা কোন ম্যাজিকে এত টাকা পেল, জানি না।’’ মিঠুনকে পাল্টা বিশ্বাসঘাতক ও অকৃতজ্ঞ বলে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তী বরাবরই রাজনীতিতে সুবিধাবাদী অবস্থান নিতে চেয়েছেন। তাঁর কোনও গুরুত্ব নেই।’’ এই সূত্রেই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত হওয়ার প্রসঙ্গও টেনেছেন তিনি।