কলকাতা হাই কোর্ট নিজস্ব চিত্র
প্রায়ই মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন বাবা, দাদা ও কাকা। তাতে সমর্থন রয়েছে মায়েরও। এই অভিযোগ তুলে থানায় মামলা রুজু করেন এক তরুণী। মেয়ের ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের দ্বারস্থ হলেন মা। কলকাতা হাই কোর্টে মায়ের আর্জি, মানসিক সমস্যা রয়েছে মেয়ের। তাই সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে চিকিৎসার নির্দেশ দিক আদালত।
জানা গিয়েছে, টিটাগড়ের বাসিন্দা ২১ বছরের ওই তরুণীর মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। সকলেই তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। যার কোনও বাস্তব সত্যতা নেই। শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও। এমনকি পরিচিতদের কাছে সে কথা প্রায়ই বলেন। তিনি যে কলেজে পড়তেন, সেখানকার প্রিন্সিপালের কাছেও সে বিষয়ে নালিশ করেন। ওই তরুণীর কথা বিশ্বাস করে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশি সাহায্যের কথা জানান সুরেন্দ্রনাথ কলেজের প্রিন্সিপাল। সেই মতো আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় বাবা, দাদার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন ওই তরুণী। তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই ভুয়ো ও মনগড়া। মানসিক ভাবে বিষাদগ্রস্ত হওয়ার ফলেই তরুণীর ওই পরিণতি। এর পর তাঁর মানসিক চিকিৎসার জন্য লুম্বিনী পার্কে পাঠায় পুলিশ।
সেখানে চিকিৎসায় উন্নতি হয় তরুণীর। পরে তিনি নিজেও বাড়ি ফেরার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। বাড়ির লোককে জানান, ভবিষ্যতে নার্স হতে চান। সেই মতো তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে এনে নার্সিং কলেজে ভর্তি করা হয়। তবে মানসিক অবস্থার যে পরিবর্তন হয়নি তা লক্ষ্য করা যায় কিছু দিন পরে। কারণ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের মতো ওই নার্সিং কলেজেও বাড়ির লোকের বিরুদ্ধে ফের একই অভিযোগ করেন। এর পরই মেয়ের অভিযোগ খারিজ করে চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করার আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে দরবার করেন মা। মঙ্গলবার ওই মামলাটি ওঠে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে। মায়ের আর্জি মেনে নেন বিচারপতি।
এই মামলায় মায়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘ওই তরুণীর সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে আদালত। মায়ের দাবি মতো চিকিৎসা করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।’’