নাবালিকার হাতে সেফটিপিন ফুটিয়ে লেখা নাম লেখার ঘটনায় মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের। নিজস্ব চিত্র
সরকারি হোমে সদ্য আসা নাবালিকার উপর অত্যাচার ‘দিদি’দের। তেমনটাই অভিযোগ করেছেন চুঁচুড়ার সিঙ্গি বাগানের এক বাসিন্দা। তাঁর দাবি, লিলুয়ার ওই হোমে তাঁর মেয়ের উপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়েছে। এ নিয়ে চুঁচুড়া সদর মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। বুধবার লিলুয়ার ওই হোমেও যান তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৫ ডিসেম্বর। নাবালিকার বাবার দাবি, কন্যাশ্রীর ফর্ম তুলতে যাওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে অশান্তি হয় মেয়ের। পরিবারের দাবি, রাগ করে কাউকে কিছু না বলে ওই দিন সন্ধ্যায় চুঁচুড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে হাওড়া চলে যায় মেয়েটি। হাওড়া জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাতে মেয়েটিকে হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার করে রাখা হয় লিলুয়া হোমে। তার পরিবারের তরফে চুঁচুড়া সদর মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, লিলুয়ার ওই হোমটি থেকে উত্তরপাড়ার হোমে ওই আনা হয় ওই নাবালিকাকে। হোমে মেয়ের উপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নাবালিকার বাবা এবং মা।
ওই পরিবারের দাবি, মেয়ের কাছে বাড়ির ঠিকানা পেয়ে যোগাযোগ করেছিলেন হোম কর্তৃপক্ষ। এর পর হোমে গিয়ে তাঁরা দেখা করেন মেয়ের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, হোমের তরফে বলা হয়, মেয়েকে ছাড়া হবে ১৪ দিন পর। তাঁদের অভিযোগ, গত ৪ জানুয়ারি দু’টি হোম ঘুরে মেয়ে বাড়ি ফিরলে দেখা যায়, তার হাতে রয়েছে ক্ষতচিহ্ন।
আরও পড়ুন: উইপোকারা বেরিয়ে গেলেই ভাল হয়, সোহমের কটাক্ষ কি সেই শুভেন্দুকেই
আরও পড়ুন: মিম, বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি মোকাবিলার বার্তা অধীরের
নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, ‘‘দেখতে পাই মেয়ের হাতে সেফটিপিন ফুটিয়ে নাম লেখা রয়েছে। মেয়ে জানিয়েছে, হোমের অন্যান্য আবাসিকরা জোর করে এই কাজ করেছে। এই ঘটনার পর ও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত।’’ নাবালিকার বাবা বলছেন, ‘‘মেয়ে হোমে ছিল এটা জানতে পেরে খুব নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। কিন্তু ও বাড়ি ফেরার পর দেখি এই কাণ্ড। আমরা চাই, এই ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’
অভিযোগ পেয়ে বুধবারই লিলুয়া হোমে যান রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তিনি হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর মতে, ‘‘মেয়েটি এর আগেও বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। এ বার কেউ তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাই ফের সে বাড়ি থেকে পালায়। কিন্তু হাওড়া স্টেশনে তাকে ফেলে রেখে পালায় ওই ব্যক্তি। কোভিড পরিস্থিতির জন্য হোমে মেয়েটিকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। যে নাম মেয়েটির হাতে লেখা হয়েছে সেই নামে কোনও আবাসিক নেই। তবে তা কারও ডাক নাম হতে পারে। মেয়েটিকে হুগলির একটি হোমে রাখা হয়েছিল। সেখানেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।’’