রাহুল সিংহ
মুরগি চোর সন্দেহে ঊনিশ বছরের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে মলদ্বারে স্ক্রু-ড্রাইভার ঢুকিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে নদিয়ার চাকদহ শহরে।
নিহতের নাম রাহুল সিংহ। বুধবার সকালে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে চাকদহ শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পিকনিক গার্ডেন এলাকায়। বুধবার রাতে নিহতের পরিবারের লোকেরা এ ঘটনায় তাঁদের বাড়িওয়ালা অনিল বর্মনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাহুলের দাদা রোহিত সিংহের দাবি, মৃত্যুর কিছু ক্ষণ আগে তাঁর ভাই পায়ুদ্বারে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে খুনের কথা নিজের মুখে জানিয়ে গিয়েছে। রোহিতের কথায়, ‘‘ভাই আমাকে বলে, মলদ্বারে স্ক্রু-ড্রাইভার ঠিক মতো ঢুকছিল না বলে অনিল হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে তা ঢোকায়।’’
ঘটনার কথা জানাজানির পর বুধবার রাতেই অনিলের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। অভিযুক্ত ও তার পরিবারের লোকেরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। রাহুলের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
রানাঘাট পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। নিহতের বাবা এবং দাদার উপস্থিতিতে তিন জন চিকিৎসক মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন। ভিডিয়োগ্রাফিও হয়েছে।’’
অভিযুক্ত অনিল বর্মনের বাড়ি ভাড়া থাকতেন নিহত রাহুলের দাদা রোহিত। রাহুল মাঝে-মাঝে দাদার কাছে গিয়ে থাকত। দিন কয়েক আগে অনিলের একটি মুরগি ‘চুরি’ হয়। সে রাহুলের উপর সন্দেহ করে। অভিযোগ, বুধবার ভোরে অনিল রাহুলকে নিজের বাড়ির দোতলায় ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে, মুখে কাপড় গুঁজে প্রথমে বেধড়ক মার মারে। তার পর হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে মলদ্বারে স্ক্রু-ড্রাইভার ঢুকিয়ে দেয়।
অত্যাচারে রাহুল নেতিয়ে পড়লে অনিল রাহুলের দাদাকে দোতলায় ডেকে নিয়ে যায়। রোহিতের কথায়, ‘‘গিয়ে দেখি ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় গোঙাতে-গোঙাতে আমাকে সব কথা বলে। ওর উপর এত অত্যাচার করা হয়েছিল যে, হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও ওকে বাঁচাতে পারলাম না।’’