Corona

দেহ নিতে এসে টাকার দাবি, নালিশ

মৃতের পরিজনের অভিযোগ, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য সকালে পঞ্চায়েত-সহ নানা জায়গায় ফোন করেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২১ ০৬:৩৭
Share:

পিপিই পরে করোনায় মৃতের দেহ শববাহী গাড়িতে তুলছেন আত্মীয়রাই। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। নিজস্ব চিত্র।

বাড়িতে করোনা রোগীর মৃত্যুর পরে, প্রশাসনের নানা স্তরে খবর দিয়েছিলেন পরিজনেরা। কিন্তু পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বেলগড়িয়া গ্রামের ওই প্রৌঢ়ার দেহ নিতে যাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। এমনকি, ঘণ্টা দশেক পরে শববাহী গাড়ি এলে, সেটির চালক-সহ দু’জন দেহ তোলার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগ মৃতার পরিবারের। বাধ্য হয়ে ‘পিপিই’ পরে মৃতার দেহ তাঁরা গাড়িতে তুলে দেন বলে দাবি তাঁর স্বামী এবং ছেলের।

Advertisement

প্রশাসনিক গাফিলতির কথা অবশ্য মানতে চাননি মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে গাড়িটি ওই এলাকায় শব পরিবহণের কাজ করে, সেটি অন্য একটি দেহ সৎকারের কাজে ছিল। তাই কিছুটা দেরি হয়েছে। দেহ তুলতে টাকা চাওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ পরিবারের লোকজন প্রশাসনকে জানাননি। খোঁজ নেওয়া হবে।’’ জেলাশাসক প্রিয়ঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখব।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঞ্চাশের ওই মহিলা সপ্তাহখানেক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। রবিবার তাঁকে লাগোয়া জেলা নদিয়ার প্রতাপনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পর দিন তাঁকে কল্যাণীর একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। পরিবারের দাবি, কল্যাণীর হাসপাতালে শয্যা না মেলায় সোমবার রাতে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ মহিলার মৃত্যু হয়।

Advertisement

মৃতের পরিজনের অভিযোগ, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য সকালে পঞ্চায়েত-সহ নানা জায়গায় ফোন করেন তাঁরা। কিন্তু শববাহী গাড়ি আসেনি। দেহ বাড়িতে পড়ে থাকায় এলাকাবাসীর একাংশের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। দুপুর আড়াইটে নাগাদ শববাহী গাড়ি এসে পৌঁছয়। মৃতার ছেলের অভিযোগ, ‘‘ওই গাড়িতে থাকা দু’জন দেহ তোলার জন্য পাঁচ হাজার টাকা চান। আমাদের তা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। তা জানানোয় ওঁরা দেহ তুলতে চাননি। শেষে গাড়িতে থাকা পিপিই পরে বাবা ও আমি দেহ তুলে দিই।’’

কালনা মহকুমায় করোনায় মৃতের দেহ সৎকারের ব্যবস্থায় দেরির অভিযোগ আগেও উঠেছে। ১ মে কালনা হাসপাতালে এক বৃদ্ধার দেহ শয্যা থেকে তুলতে দেরি হওয়ার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন করোনা ওয়ার্ডে থাকা অন্য রোগীরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর পরিজনেরা সৎকারের অনুমতি দিতে দেরি করায় সমস্যা হয়। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘করোনায় মৃতদের দেহ পরিবহণের জন্য আরও একটি গাড়ির ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিকের বক্তব্য, ‘‘দেহ পরিবহণের জন্য দু’টিগাড়ি ও কর্মীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ টাকা চাওয়ার অভিযোগের তদন্ত হবে বলে আশ্বাস পূর্বস্থলী ১ ব্লক প্রশাসনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement