‘সোহেল’ একাই। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
‘ঘোমটা’ খুলতেই চিত্তির বনকর্মীরা!
সোহেলের সঙ্গে আসার কথা ছিল তার ‘বউ’য়ের। কিন্তু বউয়ের বদলে এল রাজেশ!
হল কী? সোমবার সকাল থেকে তোলপাড় ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানা। কর্মীরা তটস্থ। বন দফতরের লোকজন বিভ্রান্ত। কর্তারা নাজেহাল। মুখ্যমন্ত্রী শুনলে বলবেন কী! তাঁর জন্যই তো তড়িঘড়ি এত আয়োজন! শেষমেশ সোহেল থাকল। রাজেশ ফিরে গেল। সোহেলের জন্য দ্রুত সঙ্গিনীর খোঁজও শুরু হয়ে গেল তখনই।
বুধবার ঝাড়গ্রাম কলেজ মাঠের সরকারি সভা থেকে ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’ বা ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানার ‘লেপার্ড এনক্লোজার’-এর উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই কারণে ওই এনক্লোজারে দু’টি চিতাবাঘ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গের খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ‘সোহেল’ আর ‘রাজেশ’ নামে দু’টি চিতাবাঘকে আনা হয় ওই চিড়িয়াখানায়। রাতটা পলিথিনঘেরা খাঁচাতেই কাটায় দুই চিতাবাঘ। সোমবার সকালে সেই ‘চাদর’ সরিয়ে চিতাবাঘ দু’টিকে মুরগি খেতে দিতে গিয়েই চমকে যান বনকর্মী এবং চিড়িয়াখানার কর্মীরা। আসার কথা ছিল একটি পুরুষ-চিতাবাঘ এবং একটি স্ত্রী-চিতাবাঘের। সেখানে দু’টিই ‘পুরুষ’!
আরও পড়ুন:দেওয়ালির পরে মুকুল নিয়ে সিদ্ধান্ত বিজেপির
পরিস্থিতির জন্য বন দফতর এবং বন্যপ্রাণ শাখার সমন্বয়ের অভাবকেই দুষছেন বনকর্মীদের একাংশ। সোহেলকে এনক্লোজারে ঢোকাতেও তাঁদের কালঘাম ছোটে। কারণ, তার খাঁচার গেটটি ছিল চার ফুট চওড়া। এনক্লোজারের দরজা ফুট তিনেকের। শেষমেশ ঠিকাদার, মিস্ত্রি এনে এনক্লোজারের একদিকের জাল কেটে নতুন করে ‘গেট’ তৈরি করে সোহেলকে ঢোকাতে বিকেল সাড়ে তিনটে বেজে যায়। এর মধ্যে এনক্লোজারে চিতাবাঘ থাকার পরিবেশ তৈরির বকেয়া কাজ (গাছ লাগানো, ছাউনি তৈরি ইত্যাদি) সারা হয়।
খয়েরবাড়ি থেকে আসা সেখানকার চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মীরা জানান, চিতাবাঘের জন্য যে একটাই এনক্লোজার, সে তথ্য বন্যপ্রাণ শাখার কাছে ছিল না। তাই দু’টি পুরুষ-চিতাবাঘ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ওই কর্মীরাই জানান, দু’টি পুরুষ-চিতাবাঘ থাকলে লড়াই বাঁধবে। এর পরেই ঠিক হয় সোহেলকেই শুধু রাখা হবে।