মনে-রেখে: নিহত পুরপ্রধানের জন্য স্মরণসভা পুরসভায়। —নিজস্ব চিত্র।
গুলিতে নিহত পুরপ্রধানকে চোখের জলে স্মরণ করল ভদ্রেশ্বর। ফের মিলে গেল সব রাজনৈতিক দল।
শুক্রবার পুরভবন চত্বরে স্মরণসভাটি হয়। এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, উপপুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী, সিপিএমের প্রাক্তন পুরপ্রধান দেবগোপাল চক্রবর্তী-সহ কাউন্সিলর ও পুরকর্মীরা। ফের খুনে অভিযুক্ত নির্দল কাউন্সিলর রাজু সাউকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি ওঠে।
গত ২১ নভেম্বর রাতে পুরপ্রধআন মনোজ উপাধ্যায় খুনের পরের দিনই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে ভদ্রেশ্বর থানার সামনে অবরোধে সামিল হয়েছিলেন সব রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকেরা। শুক্রবারও দেখা গেল সেই একই ছবি। পুরভবনের গেটের সামনে মনোজবাবুর ছবিতে মালা দেওয়া হয়।
মন্ত্রী তপনবাবু দাবি করেন, ‘‘দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পুলিশি তদন্তে যাদের নাম উঠে আসবে তাদের রেয়াত করা হবে না।’’ উপ-পুরপ্রধান প্রলয়বাবু জানান, উন্নয়নের ক্ষেত্রে মনোজবাবুর যা পরিকল্পনা ছিল সেগুলি রূপায়ণ করা হবে। ভদ্রেশ্বরের প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের দেবগোপাল চক্রবর্তীর ক্ষোভ, ভদ্রেশ্বর এলাকায় এই ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। মনোজবাবুর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘দলগত বিরোধ থাকলেও তিনি আমাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলতেন।’’ কাউন্সিলর প্রকাশ গোস্বামী বলেন, ‘‘রাজু সাউ-সহ এফআইআরে অভিযুক্ত বাকি তিন জনকে দ্রুত গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ কমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন।’’
গত ২১ নভেম্বর রাতে গেটবাজারের নিজের বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন মনোজ। এই ঘটনায় তেতে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডেকে বদলি করে অজয় কুমারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরিয়ে দেওয়া হয় ভদ্রেশ্বর থানার ওসি ও তেলেনিপাড়া ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টরকেও। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে অন্যতম অভিযুক্ত, পুরসভার নির্দল কাউন্সিলর রাজু সাউ এখনও পলাতক। খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও এখনও উদ্ধার হয়নি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তদন্তের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক এখনও বাকি। ঘটনার রাতের পুনর্নির্মাণ জরুরি। কিন্তু ধৃতদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা কী আচরণ করবেন, তা নিয়ে চিন্তিত তদন্তকারীরা। কারণ ধৃতদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা জরুরি।