Environment Minister

পরিবেশ রক্ষায় সব নজর নতুন মন্ত্রীর দিকেই

ইয়াসের তাণ্ডব এবং ওই ঘূর্ণিঝড়েরই জেরে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের পাশাপাশি দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২১ ০৬:২১
Share:

ফাইল চিত্র।

বহু কাল আগে নগরের বিনিময়ে অরণ্য ফেরানোর আর্তি কবিতার ছন্দে তুলে ধরেছিলেন প্রকৃতিপ্রেমিক কবি। এ বার বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগানেও যেন তারই প্রতিধ্বনি!

Advertisement

২০২১ সালের পরিবেশ দিবসে বিশ্বজনীন স্লোগান হিসেবে বলা হচ্ছে, ‘রিইম্যাজিন, রিক্রিয়েট, রিস্টোর’। অর্থাৎ প্রকৃতির স্বাভাবিকত্ব ফিরিয়ে এনেই সভ্যতার যথার্থ স্থায়ী অগ্রগতি সম্ভব। প্রকৃতির স্বাভাবিকত্ব ফেরানোর এই মর্মকথাটি সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-বিধ্বস্ত বঙ্গভূমিতে যেন আরও বেশি করে উপলব্ধি করতে পারছেন পরিবেশবিদ ও পরিবেশকর্মীরা! বাঁচতে হলে যে পরিবেশকে বাঁচাতেই হবে, মর্মে মর্মে সেটা উপলব্ধি করছেন অনেকেই। প্রকৃতির ধ্বংসলীলার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পরিবেশ বাঁচাতে রাজ্যের নতুন পরিবেশমন্ত্রী কী করেন, সে-দিকেই তাকিয়ে আছেন তাঁরা।

ইয়াসের তাণ্ডব এবং ওই ঘূর্ণিঝড়েরই জেরে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের পাশাপাশি দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পরিবেশবিদেরা বলছেন, প্রকৃতিকে নষ্ট করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার খেসারত দিতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গেও বিভিন্ন নদী দূষিত হচ্ছে, বনাঞ্চলে কোপ পড়ছে, মারা যাচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। রাজ্যে সার্বিক ভাবে জলবায়ুতে পরিবর্তনের ইঙ্গিতও স্পষ্ট। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার উপায় কী?

Advertisement

পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর মতে, প্রথমেই জোর দিতে হবে বনসৃজন এবং জলাভূমি রক্ষার উপরে। কারণ, কার্বন শুষে নেওয়ার ক্ষেত্রে এগুলিই প্রধান হাতিয়ার। বিভিন্ন পতিত জমিতে বনাঞ্চল তৈরি করা যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, বনাঞ্চল শুধু কার্বন শোষণ করে না, জীববৈচিত্র রক্ষা এবং বাস্তুতন্ত্রেও তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

রাজ্যের পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, উন্নয়নের নামে প্রকৃতির ক্ষতি করা যাবে না কোনও মতেই। বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বলেই বঙ্গভূমির বিপদ আরও বেশি। তাঁর বক্তব্য, বঙ্গোপসাগরে উষ্ণায়নের হার বেশি। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ বাড়বে। একই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে, নবীন ব-দ্বীপ এলাকা সুন্দরবন ক্রমশ বসে যাচ্ছে। তার ফলে জলস্তরের সার্বিক বৃদ্ধির হার বেশি। ফলত ম্যানগ্রোভ রক্ষা এবং উপকূল বিধি নিয়ে চূড়ান্ত সচেতনতা জরুরি।

তবে এ রাজ্যের পরিবেশ দফতরের হালহকিকত নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। বাম বা তৃণমূল, দুই আমলেই বেশির ভাগ সময় গুরুত্বহীন কিংবা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কারও হাতে এই দফতর দেওয়া হত। এ বার পরিবেশমন্ত্রী হয়েছেন রত্না দে নাগ, যিনি পেশায় চিকিৎসক। আজ, শনিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে অনুষ্ঠান করবে রাজ্যের পরিবেশ দফতর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেখানে রাজ্যে পরিবেশ রক্ষায় নতুন মন্ত্রী কোনও নয়া দিশা দেখান কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী পরিবেশকর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement