হুগলির ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম খুন হওয়ার দু’দিনের মাথায় বদলি হয়ে গেলেন চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী। সোমবার তাঁর জায়গায় পাঠানো হল হুমায়ুন কবীরকে। অখিলেশকে কলকাতার যুগ্ম কমিশনার (এ) পদে বদলি করা হয়েছে। এই বদলির পিছনে চক্রান্ত দেখছে জেলা বিজেপি। যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি জেলা তৃণমূল।
গত শনিবার সকালে অফিস যাওয়ার পথে ব্যান্ডেল স্টেশনেই খুন হন দিলীপ রাম। খুনের পিছনে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন নিহতের পরিবার এবং তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বিজেপির দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হতে হয়েছে ওই তৃণমূল নেতাকে। দিলীপের স্ত্রী রিতা সিংহ ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান।
লোকসভা ভোটে হুগলি আসনটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। ওই কেন্দ্রের অন্তর্গত চুঁচুড়া বিধানসভাও হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। খুনের পরে শনিবার চুঁচুড়া থানার আইসি-কে বদলি করে প্রশাসন। রবিবার ব্যান্ডেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকেও বদলি করা হয়। আর এ দিন সিপি-কেই বদলি করা হল।
তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ অনেক দিন থেকেই ‘কথা’ শুনছিল না। নির্বাচনের পর থেকে সেই ‘অসহযোগিতা’ আরও বেড়ে যায়। এক নেতার কথায়, ‘‘দিলীপ রামকে হত্যা করা হতে পারে, অনেকদিন আগে থেকে এ কথা পুলিশকে বার বার বলা সত্ত্বেও তারা কিছুই করেনি। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারি নিয়েও তেমন তৎপরতা নেই।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি সুবীর নাগ অবশ্য বলেন, ‘‘এত দিন পুলিশের একটা নিরপেক্ষ আচরণ ছিল। লোকসভা ভোটের সময় অন্য জায়গায় গোলমাল হলেও হুগলিতে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটেনি। পুলিশকে শাসক দলের কাজে লাগানোর লক্ষ্যেই এই বদলি করা হল বলে সন্দেহ হচ্ছে।’’
অন্য দিকে, সোমবার বিধানসভার চুঁচুড়ায় বিধায়ক অসিত মজুমদার দাবি করেন, স্বাধীনতার পরে সেখানে রাজনৈতিক কারণে কেউ খুন হননি। এমনকি, বাম আমল বা নকশাল আমলেও হয়নি। তাঁর অভিযোগ, দিলীপকে বিজেপি আশ্রিত গুণ্ডারা খুন করেছে। অসিতের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপি নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ, তা হলে সেটাই স্পষ্ট হল।’’