চাকরি বাতিল নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবে হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
স্কুলে গ্ৰুপ-ডি বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ মামলায় ২৬/১১ হামলার মূল সন্ত্রাসবাদী আজমল কসাবের প্রসঙ্গ উঠল কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য,‘‘এ দেশের আইন আজমল কসাবকে নিজের বক্তব্য জানানোর যদি সুযোগ দেয়, তবে বেআইনি ভাবে চাকরিপ্রাপকদেরও সুযোগ পাওয়া উচিত।’’ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে তাঁরা জানান, ৮ জেলার স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-কে এই নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠাতে হবে। তাঁরা স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৬৯৪ কর্মীকে এই বিষয়ে অবগত করবেন। এই আদালত ওই কর্মীদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেবে। তার পরই চাকরি বাতিল নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবে হাই কোর্ট।
বৃহস্পতিবার সিবিআই হাই কোর্টকে জানায়, গাজিয়াবাদের সার্ভার থেকে তারা ১৬৯৮ গ্ৰুপ-ডি কর্মীর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) উদ্ধার করেছে। বেশিরভাগ ওএমআর শিটই ফাঁকা। কোনও উত্তর নেই। অর্থাৎ, অধিকাংশের প্রাপ্ত নম্বর শূন্য। এ রকম ১৬৯৮ জনের কম নম্বর থাকা সত্ত্বেও অসৎ উপায়ে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। এমনকি, বেআইনি ভাবে যে নিয়োগ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার তা স্বীকার করে নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং পর্ষদ। যা শুনে বিচারপতি বসু বিস্ময় প্রকাশ করেন। প্রথমে তাঁর মৌখিক নির্দেশ ছিল, বেআইনি ভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের কারও চাকরি থাকবে না। প্রত্যেকের চাকরি বাতিল করা হোক। আর এক দিনও তাঁদের স্কুলে দেখতে চাই না। বিচারপতির এই বক্তব্য শুনে রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসুমল্লিক এখনই এই নির্দেশ না দেওয়ার আর্জি করেন।
বিশ্বব্রতের বক্তব্য, আদালত এখন এই নির্দেশ দিল রাজ্যের প্রচুর স্কুল অচল হয়ে পড়বে। স্কুলে তালা খোলার, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার লোক পাওয়া যাবে না। এর প্রভাব গিয়ে পড়বে পড়ুয়াদের উপর। বিষয়টি বিবেচনা নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন বিচারপতি বসু। তিনি জানান, চাকরি তো যাবেই। তবে তার আগে আদালত ১৬৯৪ জনের বক্তব্য শুনতে চায়। তাঁরা চাইলে আদালতে এসে মামলায় যুক্ত হতে পারেন। এ প্রসঙ্গেই আজমল কসাবের প্রসঙ্গ তোলেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় আইনব্যবস্থা এমনই যে, কিছুতেই তার ফাঁসি হবে না। এমন ধারণা ছিল মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার মূল সন্ত্রাসবাদী আজমলের। যদিও তার সেই ধারণা টলে গিয়েছিল ফাঁসির ঠিক আগের দিন। শেষ পর্যন্ত ফাঁসির দড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কসাব।