—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের জন্য দলের প্রস্তুতি-পর্বের রাশ এ বার অনেকটাই হাতে নিয়েছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সেই পরিকল্পনা মেনেই রাজ্যে কংগ্রেসের ভোট-প্রস্তুতি, প্রচার কৌশল এবং জোট-প্রক্রিয়ার হাল বুঝতে কলকাতায় আসছেন এআইসিসি-র দুই নেতা জিতিন প্রসাদ এবং বি কে হরিপ্রসাদ। বিধান ভবনে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি, রবিবার দলের একাধিক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁদের। সে দিনই আবার বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন-রফা নিয়ে তৃতীয় দফার বৈঠক রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের।
জিতিন এখন এআইসিসি-র তরফে বাংলার ভারপ্রাপ্ত। সেই সঙ্গেই বাংলায় নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে যে চার সিনিয়র পর্যবেক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছে এআইসিসি, তার মধ্যে আছেন হরিপ্রসাদ। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এ যাত্রায় শহরে এসে প্রদেশ সমন্বয়, প্রচার এবং ইস্তাহার কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন জিতিনেরা। বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আমলে এই কমিটিগুলি তৈরি হওয়ার পরে তাদের নিজস্ব বৈঠক এখনও হয়নি। দলের প্রচার ও প্রস্তুতির বিষয়ে জিতিনেরাই এ বার রূপরেখা ঠিক করে দিতে পারেন বলে কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য।
বামেদের সঙ্গে জোট-প্রক্রিয়া ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সেরে ফেলার জন্য বার্তা দিয়েছিলেন স্বয়ং কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। কিন্তু ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ গড়িয়ে গেলেও আসন-রফা সম্পূর্ণ হয়নি। রাজ্যের ১৯৩টি আসনের জন্য দু’পক্ষেপর বোঝাপড়া হয়েছে, এখনও ১০১টি আসন নিয়ে আলোচনা বাকি। শুধু তা-ই নয়, আগের বার তাদের জেতা ৪৪টির পরে আরও যে ৪৮টি আসন এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের ভাগে এসেছে, সেগুলিও চিহ্নিত করে উঠতে পারেনি তারা। ফলে, বামেদের কাছেও সেই তালিকা পৌঁছয়নি। আবার আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড ময়দানে জোটের সমাবেশ হবে বলে দু’পক্ষের রাজ্য নেতৃত্ব ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে রাহুল গাঁধী বা অন্য কে আসবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সেই কারণে ব্রিগেডে বক্তার তালিকা দিয়ে এখনও প্রচার করতে পারছে না বাম বা কংগ্রেস কেউই।
কংগ্রেসের ঘর গোছানো না হওয়ায় ঝুলে রয়েছে আব্বাস সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোটের বিষয়টিও। বামেরা চায়, তাদের এবং কংগ্রসের ভাগ থেকে কিছু আসন ছেড়ে আব্বাসদের জায়গা করে দিতে। কিন্তু কংগ্রেস এখনও নিজেদের আসনের তালিকাই ঠিক করতে না পারায় আব্বাসদের নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না জোট-শিবির। আব্বাস বলে রেখেছেন, তাঁদের পক্ষে ফেব্রুয়ারির ৭-৮ তারিখের পরে অনির্দিষ্ট কাল অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা মেনে নিচ্ছেন, ‘‘বিভিন্ন কারণে জোটের প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় বেরিয়ে যাচ্ছে। যত দেরি হবে, বিরোধী পরিসরে বিজেপি আরও জাঁকিয়ে বসবে— এটা আমাদের সকলকেই মাথায় রাখতে হবে।’’