এ চেল্লাকুমার
গত ছ’মাস ধরে এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতার পদ খালি পড়ে ছিল। অবশেষে সনিয়া গাঁধী তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ এ চেল্লাকুমারকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে নিয়োগ করলেন। তবে সেটাও পাকাপাকি নয়। অন্তর্বর্তী দায়িত্ব।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে কাকে পাঠানো যায়, তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কংগ্রেস হাই কমান্ড দলের মধ্যে কথা বলা শুরু করে। কিন্তু এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অনেকেই দায়িত্ব নিতে চাননি। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসের করুণ দশা। সেই কারণেই অন্তর্বর্তী দায়িত্ব দিয়ে আপাতত চেল্লাকুমারকে পাঠানো হয়েছে। দলের সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সদস্যপদ অভিযান চলছে। এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা ছাড়া সাংগঠনিক নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
ডাক্তারি পাশ করে রাজনীতিতে আসা চেল্লাকুমার দু’বার তামিলনাড়ুতে বিধায়ক হয়েছিলেন। এক সময় তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তামিল মানিলা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। গত ২০১৯-এর নির্বাচনে তিনি তামিলনাড়ুর কৃষ্ণাগিরি থেকে জিতে প্রথম লোকসভায় আসেন। এক বছর ধরে তিনি ওড়িশার দায়িত্বে রয়েছেন। এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি তাঁকে আন্দামান-নিকোবরেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওড়িশার আগে তিনি গোয়ার দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময়ই গোয়ার ১০ জন কংগ্রেস বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ওড়িশাতেও গিয়েও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব, অন্দরের ক্ষোভ সামলাতে হচ্ছে চেল্লাকুমারকে। বাংলার দায়িত্ব পাওয়ার পরে চেল্লাকুমার বলেন, ‘‘দিল্লিতে গিয়ে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তার পরে কলকাতায় যাওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করব।’’
বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বড় অংশই অবশ্য মনে করছে, রাজ্যের পরিস্থিতি ও দলের হাল সম্পর্কে অবহিত কাউকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিলে ভাল হত। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে দল অনেকটাই দিশাহীন অবস্থায়। স্থানীয় ভাবে নেতা-কর্মীরা যাঁরা যেমন পারছেন, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চালাচ্ছেন। যে কোনও পর্যবেক্ষকের পক্ষেই এই পরিস্থিতি কঠিন। তবে তার মধ্যেও সর্বভারতীয় স্তরের যে নেতারা রাজ্যের খোঁজখবর রাখেন, তাঁদের কাউকে পাঠালে কাজের সুবিধা হত।’’ এআইসিসি-র তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, চেল্লাকুমার বাইরে পরিচিত মুখ না হলেও সংগঠনের কাজে যুক্ত বেশ কিছু দিন ধরেই। তা ছাড়া, এই দায়িত্ব অন্তর্বর্তীই। সাংগঠনিক নির্বাচনের পরে পূর্ণ দায়িত্বে কাকে পাঠানো হবে, তা আবার দেখা হবে।
বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক জিতিন প্রসাদ বাংলার দায়িত্বে ছিলেন। জুন মাসে জিতিন বিজেপিতে যোগ দেন। তার পরে জিতিন উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের মন্ত্রী হয়ে গেলেও তাঁর ছেড়ে যাওয়া পদ খালিই পড়ে ছিল। সহ-পর্যবেক্ষক বি পি সিংহই সমন্বয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত মাসে রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান সনিয়ার সঙ্গে দেখা করে এআইসিসি-র কোনও নেতাকে বাংলার দায়িত্বে পাঠানোর অনুরোধ করেন। সনিয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্যদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন।