আয়োজন এবং পঠনপাঠনের ব্যবস্থা দীর্ঘদিনের। কিন্তু ছিল না শুধু তকমা, পেশাদারির তকমা। এত দিনে কৃষি, প্রাণিবিজ্ঞান, উদ্যানপালন, মৎস্যবিজ্ঞান-সহ আনুষঙ্গিক ডিগ্রি পাঠ্যক্রমগুলি সেই তকমা পাওয়ায় ওই সব ডিগ্রিধারী এ বার সম্মান ও নিয়োগের ক্ষেত্রে যাবতীয় বৈষম্যের মোকাবিলা করতে পারবেন।
ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ বা আইসিএআর অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কৃষি, প্রাণিবিজ্ঞান, উদ্যানপালন, মৎস্যবিজ্ঞান-সহ বিভিন্ন ডিগ্রি পাঠ্যক্রমকে ‘পেশাদারি’ তকমা দিয়েছে কেন্দ্র। ওই সব পাঠ্যক্রম পাশ করা প্রার্থীদের নিয়োগ মসৃণ করার জন্য দ্রুত নিয়োগনীতি সংশোধন করতে সব রাজ্যের কৃষি অধিকর্তা এবং স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এসএসসি) এবং ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসি-র চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক
কল্যাণ মন্ত্রক।
গত ১ জানুয়ারি কৃষি মন্ত্রকের সচিব সাজিত কুমার কুনহালাতের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তি হাতে পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি দফতরও। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘কৃষি সংক্রান্ত ডিগ্রি কোর্স সরকারি ভাবে ‘প্রফেশনাল’ ঘোষিত না-হওয়ায় চাকরির ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যায় প়ড়তেন ছাত্রছাত্রীরা। নতুন বিজ্ঞপ্তির ফলে বিশেষ করে মৎস্যবিজ্ঞানের স্নাতকেরা অগ্রাধিকার পাবেন।’’ নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বাংলার তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন বলে জানান রাজ্যের প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পূর্ণেন্দু বিশ্বাস।
ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি, উদ্যানপালন, এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং, ডেয়ারি টেকনোলজি, ফরেস্ট্রি, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স, ফিশারিজ সায়েন্স, ফুড নিউট্রিশন, ফু়ড টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজির স্নাতক কোর্স পড়ানো হয়। অভিযোগ, এই সব কোর্স পাশ করাও পরেও সরাকারি ভাবে ‘পেশাদারি পাঠ্যক্রম’-এর স্বীকৃতি না-থাকায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতেন এই সব ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা। নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই সব পাঠ্যক্রমকে পেশাদারি ও কারিগরি তকমা দিয়ে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির সমতুল ঘোষণা করা হয়েছে।
বৈষম্যের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের সচিব কুনহালাথ। দিল্লি থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘আইসিএআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ) অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে পাশ করা পড়ুয়ারা নিয়োগের সময়ে বিভিন্ন ভাবে বৈষম্যের শিকার হতেন। সেই জনিয সব রাজ্যকে তাদের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির নিয়োগ-পদ্ধতি পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে।’’
নতুন বিজ্ঞপ্তি বাস্তবায়িত হলে রাজ্যে কৃষি, মৎস্যবিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলিতে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করেন প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। রাজ্যের কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে বিজ্ঞপ্তি এসেছে। আমরা সেই নির্দেশ অনুসারেই কাজ করছি।’’