দিলীপ ঘোষ এবং বাবুল সুপ্রিয়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দিলীপের মন্তব্য মানেই বাবুলের টুইট। এই চাপানউতর রাজ্য রাজনীতিতে চেনা। সেটাই যেন নতুন মাত্রা পেয়েছে সম্প্রতি। শুধু দিলীপ ঘোষকে জবাব দিতে গিয়েই নয়, বিভিন্ন সময়ে বিজেপিতে থাকার সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়েও সরব হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। আর তা থেকেই উঠেছে প্রশ্ন, তৃণমূলে গিয়ে, বিধায়ক হয়েও কি বাবুলের মন বিজেপিতেই পরে রয়েছে? আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে এমন প্রশ্ন শুনে অবশ্য বাবুল মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ঘনিষ্ঠদের মারফত জানিয়েছেন, দিলীপ তাঁকে নিয়ে কিছু বললে তিনি জবাব দেবেনই। ইট মারলে পাটকেল খেতেই হবে। তৃণমূলে থেকেও বিজেপি সম্পর্কে মন্তব্য প্রসঙ্গে বাবুল ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, সবই তো আর রাজনীতি নয়, অনেকটাই ব্যক্তিগত।
দিলীপকে আক্রমণ করতে অবশ্য কুণ্ঠা দেখাননি বাবুল। বলেন, ‘‘দিলীপদাকে আমি কোনও দিনই গুরুত্ব দিয়ে ভাবিনি। আমার কাছে উনি বরাবরই খোরাকের বিষয় হয়ে থেকেছেন। উনি রাজনীতির লজ্জা। যা বলার তা টুইটে লিখেছি। আর কিছু বলব না।’’
শনিবারে বাবুল সম্পর্কে ‘শিল্পীরা রাজনীতিতে ফিট করেন না’ বলে মন্তব্য করেন দিলীপ। বাবুল বিজেপিতে থাকার সময়ে তিনি যে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন সেটা বলতে গিয়ে দিলীপ মন্তব্য করেন, ‘‘আমি কড়া ভাবে বলেছি। এখানে চলবে না। এটা বিজেপি। এটা দিলীপ ঘোষ চালায়। চোখে চোখ রেখে বলেছি। সবাইকে বলতাম।’’ এর পরেই বাবুল টুইটে লেখেন, ‘খড়্গপুরে ২০২৪-এ জিততে পারলে আমার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করবেন দিলীপবাবু।’ এমনকি, সেখানে দিলীপকে ‘লজ্জাহীন’ বলে মন্তব্য করেন বালিগঞ্জের বিধায়ক।
এখানেই থেমে যায়নি লড়াই। মঙ্গলবার দিলীপকে রাজনৈতিক মন্তব্য নিয়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সতর্ক করার পরে যেচেই আক্রমণ শানান বাবুল। লেখেন, ‘দিলীপ ঘোষ ভার্বাল ডায়ারিয়ার রোগী। তাঁর কোনও লজ্জা নেই, চিকিৎসাও নেই।’ দিলীপকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ‘রগড়ে’ দিয়ে আন্দামানে চালান করতে চাইছে বলেও লেখেন বাবুল। তার রেশ ধরে বুধবার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে দিলীপ কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও খোঁচাই দেন বাবুলকে। বলেন, ‘‘বাবুল রিজেক্টেড মাল। ওঁর কথার আবার কী জবাব দেব। জাতীয় লিগের খেলা ছেড়ে উনি এখন স্থানীয় লিগে খেলতে এসেছেন।’’
এর জবাবে বাবুল দিলীপের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগ তুলেছেন। দাবি করেছেন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। এর পরে দিলীপ এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তিনি কিছু একটা বলবেনই। তারপরে পুরনো নজির বজায় রেখে জবাবও দেবেন বাবুল। এই ভাবে চলতেই থাকবে দিলীপ-বাবুল-দিলীপ বাগযুদ্ধ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।