মানবাধিকার কমিশনের সামনে তৃণমূলের সদস্যরা। ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে গণহত্যার ঘটনায় যোগী আদিত্যনাথের সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছিল তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সেই নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ গ্রহণ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
গত ২৩ এপ্রিল প্রয়াগরাজের থরবই থানা এলাকার খেভরাজপুরে একই পরিবারের পাঁচ জনকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। নিহতদের মধ্যে দু’বছরের এক শিশুকন্যা, দুই মহিলাও ছিলেন। সেই ঘটনার পরের দিনই ২৪ এপ্রিল প্রয়াগরাজে গিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলের সত্যানুন্ধান কমিটির পাঁচ সদস্য— তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ দোলা সেন, বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, তৃণমূল নেতা সাকেত গোখলে, জ্যোৎস্না মাণ্ডি এবং উত্তরপ্রদেশের তৃণমূল নেতা ললিতেশ ত্রিপাঠী। এর পরই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ঘটনাটি নিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন দোলারা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, প্রয়াগরাজ-কাণ্ডে দুই মহিলার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তার তদন্ত শুরু করেনি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এমনকী, অভিযোগপত্রে ধর্ষণের ধারাও যুক্ত করা হয়নি। তৃণমূলের এই অভিযোগই বৃহস্পতিবার গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
উল্লেখ্য, এর ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যেই আরও একটি ধর্ষণের ঘটনার রিপোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তলব করেছে মানবাধিকার কমিশন। ললিতপুরে এক তরুণীকে থানায় ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় রিপোর্ট উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিবের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছিল মানবাধিকার কমিশন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রয়াগরাজের ঘটনাটিতেও উত্তরপ্রদেশ সরকারর বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করল তারা।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, গ্রামবাসী এবং প্রয়াগরাজ পুলিশ সুপারের সামনেই তাঁদের কাছে ওই পরিবারের সদস্য সুনীল যাদব অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁর স্ত্রী এবং ২২ বছরের প্রতিবন্ধী বোনকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এফআইআর-এ ধর্ষণের ধারা (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা) যুক্ত করা হয়নি। ঘটনার পর ওই দু’জনের নগ্ন দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এমনকী, তাঁদের জামাকাপড় ছেঁড়া ছিল এবং যৌনাঙ্গে রক্তপাতের চিহ্ন মিলেছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন সুনীল। তৃণমূল জানিয়েছিল, সুনীলের অভিযোগ অনুযায়ী ধর্ষণের ধারা যুক্ত না করেই তা খতিয়ে দেখতে এই দু’জনের শারীরিক নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। যা বেআইনি। স্মারকলিপিতে সত্যানুন্ধান কমিটির এ কথাও জানিয়েছিল যে, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সুনীল, তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।