ছবি: সংগৃহীত
পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত, ‘প্রফেসার-ইন-চার্জ অফ সিকিউরিটি’, অশোককুমার গুণ। শনিবার বিশ্বভারতীর কর্মসচিবের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। সম্প্রতি বিশ্বভারতীতে সিএএ নিয়ে বক্তৃতা দিতে এসে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি আটকে ছিলেন বিজেপি সমর্থিত সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তাঁর সঙ্গেই আটকে ছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। বুধবার ওই ঘটনার পরে ক্যাম্পাসে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বপনবাবু। অশোকবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণেই আমি ইস্তফা দিয়েছি। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই।’’
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, যে কোনও আন্দোলন হলেই গাফিলতির অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা কর্মীদের উপর সরব হতে দেখা গিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। সাংসদকে ঘেরাওয়ের সময়ও একই অভিযোগ উঠেছিল। এই ‘মনোমালিন্যে’র জেরেই অশোকবাবু ইস্তফা দেন বলে বিশ্বভারতী সূত্রে দাবি।
ফি বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলনের সময় ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে উপাচার্য-সহ আধিকারিকদের রাতভর ঘেরাও হয়। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা থাকা সত্ত্বেও কেন উপাচার্য-সহ আধিকারিকদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও থাকতে হলো তা নিয়েও সেই সময় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। টানা ১৮ দিন ধরে বিশ্বভারতীর কর্মীদের কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে আন্দোলনের সময়ও নিরাপত্তা কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠতে দেখা যায়। বুধবার সেই প্রশ্ন জোরালো হয়।
ওই দিন বিশ্বভারতীর সমাজকর্ম বিভাগের মূল গেটটি তালা বন্ধ করে সিএএ নিয়ে বক্তৃতা চলছিল। মূল বক্তাই ছিলেন স্বপনবাবু। বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে গেট আটকে দেয়। সাংসদ, উপাচার্য ও আধিকারিকদের পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘেরাও হয়ে থাকতে হয়। এই ঘটনার পরেই নিরাপত্তারক্ষীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। প্রশ্ন ওঠে, বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও একজন সাংসদ এবং উপাচার্যকে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও থাকতে হল কেন? স্বপনবাবু নিজে বলেন নিরাপত্তা না থাকায় তিনি বেরোতে পারেননি। টুইট করেন রাজ্যপালও। এই ঘটনার পরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা আধিকারিকদেরও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এই পরিস্থিতিতেই অশোকবাবুকে ইস্তফা দিতে হয় বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন থাকাকালীন শারীরশিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক অশোককুমার গুণকে বিশ্বভারতীর প্রফেসর-ইন-চার্জ সিকিউরিটি বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক বছর আট মাসের বেশি তিনি এই দায়িত্ব সামলেছেন। অশোকবাবুর ইস্তফা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার।