ফাইল চিত্র।
সম্প্রসারণের পরিকল্পনা হয়েছিল ২০১২ সালে। প্রায় সাত বছর ধরে আটকে থাকা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশে সেই কাজ শুরু করার সবুজ সঙ্কেত দিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে তার টেন্ডার বা দরপত্র ডাকবে কেন্দ্রই। তাদের ‘শর্ত’ মেনেই ওই সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করতে হবে রাজ্য সরকারকে। শর্ত মানলে তবেই রাজ্যের সঙ্গে ‘মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (মউ) বা সমঝোতাপত্র সই করবে কেন্দ্র।
সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ওই সড়কের বারাসত থেকে উত্তরবঙ্গের মধ্যে কৃষ্ণনগর-উত্তরবঙ্গ অংশটিকে চার লেনে পরিণত করার কাজ শেষের পথে। কিন্তু জমি-জটে থমকে আছে বারাসত থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত প্রায় ৮৪ কিলোমিটার বিস্তৃত পথটির কাজ। বড়জাগুলি থেকে বারাসত পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তার ক্ষেত্রে জমি-জট এখনও কাটেনি। তবে কৃষ্ণনগর থেকে বড়জাগুলির কিছুটা আগে পর্যন্ত প্রায় ৬৭ কিলোমিটারের জমি-সমস্যা মিটে গিয়েছে। এই অংশেই এ বার সম্প্রসারণের কাজ হবে।
প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, কিছু দিন আগে কেন্দ্র জানতে চেয়েছিল, রাজ্য ওই অংশের কাজের দায়িত্ব নিতে চায় কি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিক্রমে তাতে রাজি হয়েছে রাজ্য। কেন্দ্র তা মঞ্জুরও করেছে। কিন্তু ওই কাজে নির্মাতা সংস্থা নির্বাচনের জন্য দরপত্রের প্রক্রিয়া নিজেদের হাতেই রেখেছে কেন্দ্র। নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় কারিগরি দিকও নির্দিষ্ট করে দেবেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই)। সেই অনুযায়ী রাজ্য সেটা শুধু বাস্তবায়িত করবে।
পূর্তকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, কিছু জাতীয় সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে এনএইচএআই। আবার কিছু সড়ক জাতীয় সড়কের কর্তৃপক্ষের অধীন হলেও সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকে রাজ্যের পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক শাখার উপরে। রাজ্য কাজ করে, কেন্দ্র সেই অর্থ রাজ্যকে মিটিয়ে দেয়। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কৃষ্ণনগর থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত অংশে সম্প্রসারণের কাজ এনএইচএআই-এর হাতে আছে। কৃষ্ণনগর-বড়জাগুলি রাস্তাটির সম্প্রসারণের দায়িত্ব রাজ্যকে দিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
প্রশ্ন উঠছে, কাজটা যদি রাজ্যই করবে, কেন্দ্র দরপত্র ডাকবে কেন?
প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, প্রকল্প-খরচ ৩০০ কোটি টাকার বেশি হলে কেন্দ্র নিজেরাই দরপত্র ডাকতে পারে। তবে চাইলে রাজ্যকে সেই দায়িত্ব দিতেও পারে কেন্দ্র। জমি অধিগ্রহণ ধরে এই প্রকল্পের খরচ কমবেশি ২২০০ কোটি টাকা। সেই জন্য দরপত্রের রাশ নিজেদেরই হাতে রেখেছে কেন্দ্র।