জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজার অভিযানের পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হচ্ছে।—ফাইল চিত্র।
দিনভর টানাপড়েন চলল সোমবার। সাংবাদিক বৈঠক হল দু’টি মেডিক্যাল কলেজে। রাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়ে দিলেন, পুলিশ-প্রশাসনের পদক্ষেপে আস্থা রেখে আজ, মঙ্গলবার তাঁদের লালবাজার অভিযানের পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হচ্ছে।
১০ জুন এক রোগীর মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। মারধরে গুরুতর আহত হন জুনিয়র চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায় ও যশ টেকওয়ানি। চিকিৎসক-নিগ্রহের প্রতিবাদে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, জেলা, সদর হাসপাতালে শুরু হয় কর্মবিরতি। তার মধ্যেই বর্ধমান মেডিক্যাল এবং ডেন্টাল কলেজে চিকিৎসক-নিগ্রহের ঘটনা ঘটে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের বক্তব্য ছিল, এনআরএস ও বর্ধমানের দু’টি ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের ধরা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকেরা লালবাজার অভিযানের পরিকল্পনা করলে তা ঠেকাতে সক্রিয় হয় প্রশাসন। শনিবার জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপের আশ্বাস দেন ডিজি। এ দিন সকালে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে জুনিয়র ডাক্তারদের জানানো হয়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এনআরএসের ঘটনায় মহম্মদ নিজামুদ্দিন ও কবির হোসেন নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে ধৃতেরা হলেন তপন মোল্লা, শেখ রাজ ও শেখ রিপন। বর্ধমান ডেন্টাল কলেজে গ্রেফতার হয়েছেন বাপন মোল্লা ও শেখ বাপন।
এই খবর জেনে এ দিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে বিবৃতি দেওয়ার জন্য সতীর্থেরা বারবার ডাকার পরেও দু’জন প্রতিনিধি ক্যামেরার সামনে আসতে ইতস্ত করছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা উঠে আসেন। এক প্রতিনিধি অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুরো খুশি বলছি না। তবে প্রশাসন যা পদক্ষেপ করেছে, তা ইতিবাচক মনে হয়েছে। মিছিল হবে কি না, এনআরএসে সাধারণ সভার পরে তা জানাব।’’
রাত ৯টা নাগাদ সেই সাধারণ সভার শেষে এনআরএসের প্রতিনিধি ইন্দ্রজিৎ মালিক বলেন, ‘‘প্রশাসনের ভূমিকায় আমরা আপাতত খুশি। তাই লালবাজার অভিযান স্থগিত রাখা হচ্ছে।’’ কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিনিধি অনির্বাণ নাথ বলেন, ‘‘বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার জন্য ডিজি আরও ১০ দিন সময় চেয়েছেন। কথা রাখায় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করব। হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রশ্নে স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে
আলাপ-আলোচনা চলবে।’’
এক পুলিশকর্তা জানান, এনআরএসের ঘটনায় পরিবহের বিবৃতি জরুরি। কিন্তু তিনি কাজে যোগ দিলেও নানা অজুহাতে তাঁর সঙ্গে পুলিশকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। যশ পুলিশকে বিবৃতি দেবেন। জুনিয়র ডাক্তারদের ঐক্য রক্ষার প্রশ্নে তাঁর বিবৃতি তাৎপর্যপূর্ণ।