Pandemic

প্রেমিক মনে বসন্ত ডিসেম্বরেই

জয়পুরিয়া ও মণীন্দ্র কলেজের কলেজের ইউনিয়নের দুই তরুণ তুর্কি নেতারও মনটন ভাল নেই!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৫:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

চেনা মুখ ছুঁয়ে থাকা দৃষ্টি তো কবেই ঢেকেছে মাস্কে। এলোমেলো আড্ডা, চায়ের গেলাসটাও সূদূরের স্মৃতি। তবু এমএ ক্লাসের শেষ পর্বে প্রেমে-পড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দুই সহপাঠীকে নিয়ে ‘ভার্চুয়াল’ ঠাট্টার উপাদানে কম পড়েনি বর্ষণা, অন্বেষা, অভিজিৎদের। বেচারিদের প্রেম শুরুর এক মাসের মধ্যেই লকডাউন। করোনাকালের প্রণয়ে দু’জনের সাকুল্যে দেখাই হয়েছে বার চারেক। ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও এই নব্য প্রেমিক-প্রেমিকার কলেজ জীবনটা তত দিনে ফুরিয়েই যাচ্ছে বিচ্ছেদ-ঝড়ে। দু’দিন আগে ব্যাচটার ‘ফেয়ারওয়েল’ পর্ব চুকে গেল ‘গুগল’ মোলাকাতে।

Advertisement

জয়পুরিয়া ও মণীন্দ্র কলেজের কলেজের ইউনিয়নের দুই তরুণ তুর্কি নেতারও মনটন ভাল নেই! ‘‘নতুন ফার্স্ট ইয়ার অনলাইনে ভর্তি হয়ে গেল। ফ্রেশার্সে নবাগতাদের সামনে কেতা দূরে থাক, একখান নতুন মুখও চোখের দেখা দেখলুম না!’’ ডিসেম্বরে কলেজ খোলার ঘোষণা ইস্তক তাই শহরে, জেলায় অনেকের প্রাণেই অন্য আগমনি! ‘কাম ডিসেম্বর’!

অতিমারিতে বাধ্যতামূলক যৌথ যাপনে প্রবীণ দম্পতিদের প্রেমজীবনে উন্নতি হলেও হতে পারে, তারুণ্যের আবেগ বেশ খানিকটা ধাক্কা খাচ্ছে। কলকাতার দক্ষিণের লেক এ তদিন শুধু প্রাতর্ভ্রমণ-পর্বে খোলা হয়েছে, ইদানীং বিকেলেও ক’ঘণ্টা দ্বার অবারিত। তবে পুলিশের বড়বাবু-মেজবাবুদের পর্যবেক্ষণ, কলেজের ক্লাস বন্ধ। ক্লাস কেটে প্রেমও দেখছি বন্ধ।

Advertisement

আরও পড়ুন: দীপাবলিতে বাজি বন্ধে রাজ্যের ভরসা ‘মানবিক’ জনতাই

আরও পড়ুন: বাগডোগরায় ডিএম, সিপি-র সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী

‘‘প্রেম বলুন বা বন্ধুতা, দূরে থেকেও হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বা ভিডিয়ো কলে যোগাযোগের জন্য কষ্টটা ফিকে হয়ে গিয়েছে ভাববেন না!’’ কাঁথি থেকে বললেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনবিজ্ঞানে এমএ প্রথম বর্ষ পাশ মিমোসা ঘোড়ই। ‘‘কলকাতা থেকে দূরে আমারই দমবন্ধ লাগছে।’’ নন্দীগ্রামের একটি কলেজে ইংরেজির শিক্ষিকা দূর্বা বসু বা পুরুলিয়ার গড় জয়পুরে বিক্রমজিৎ গোস্বামী মেমরিয়াল কলেজে বাংলার শিক্ষক সাগ্নিক মিত্র অনলাইন ক্লাস নিয়েও পড়ুয়াদের মানসিক চাপ, অস্থিরতা টের পাচ্ছেন। সাগ্নিক বললেন, ‘‘অনলাইন সমস্যায় অনেকে পরীক্ষার খাতা নিজেরা জমা দিয়ে গেল! মনে হচ্ছিল হাঁফ ছেড়ে বাঁচছে!"

জয়পুরিয়ার সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অরূপরতন আচার্যও টের পেয়েছেন, ‘‘কলেজের দু'-একজন জুটি পুজোর কেনাকাটির নামে ধর্মতলায় বিরিয়ানি খেয়ে এসেছে।’’ অতিমারির ভয় রয়েছে। তবু কলেজের নির্বাসন-পর্ব পেরিয়ে এখন ডাক দিচ্ছে চিরকালের ক্লাসরুমের খোলা জানলা, মুক্তির আকাশ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement