নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বিনয় তামাংরা। ছবি: পিটিআই।
বিমল গুরুং কে? মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বিমল গুরুং নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন বিনয় তামাং।
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) প্রধান বিনয় গুরুং এবং তাঁর সহকারী অনীত থাপাকে এ দিন নবান্নে বৈঠকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় শিবিরের সমঝোতা করাতেই ওই বৈঠক। কিন্তু বৈঠক শেষে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রাক্তন সুপ্রিমোকে কার্যত উপেক্ষা করে বিনয় বলেন, ‘‘পাহাড়ের উন্নয়ন, সেখানকার শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ে কথা হয়েছে। বিমল গুরুং আলোচনার কোনও বিষয়ই ছিলেন না।” এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিমল গুরুং কে?’’ সল্টলেকের গোর্খাভবনে বসে বিনয়ের মন্তব্য, ‘‘বিমল গুরুং আইনের চোখে এক জন ফেরার অভিযুক্ত।” তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমরা বিমল গুরুং-রোশন গিরি বা তাঁদের শিবিরের সঙ্গে কোনও ভাবে রাজনৈতিক বা প্রশাসনির ক্ষমতা এমনকি মঞ্চও ভাগাভাগি করতে রাজি নই। আমি এ দিনের বৈঠকের আগেও এ কথা বলেছি। নবান্নের বৈঠকের পরও বলছি, ভবিষ্যতেও আমরা বিমলের সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতায় যাব না।”
বিনয় এ দিন হাবেভাবে বোঝাতে চেয়েছেন, পাহাড়ের রাজনীতিতে বিমল গুরুং আর আদৌ প্রাসঙ্গিক নন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছি।” উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে ফের পর্যটকদের ভিড়। এই কোভিড পরিস্থিতিতে তাঁদের কী ভাবে সুরক্ষিত রাখা যায় তার পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়েছে। পর্যটন পাহাড়ের সবচেয়ে বড় শিল্প। পর্যটকদের আনতে পাহাড়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।”
আরও পড়ুন: ‘আপত্তিকর মেসেজ’, রাজারহাটে তৃণমূল নেতাকে জুতোপেটা মহিলাদের
আরও পড়ুন: জমি বিবাদে গুলি- বোমার লড়াইয়ে রণক্ষেত্র চাঁচোল, মৃত ১, আহত ৩
সূত্রের খবর, বিমলকে পাহাড়ে প্রত্যাবর্তনের রাস্তা নবান্ন প্রশস্ত করতে চাইলেও, এ দিন বিমলকে নিয়ে নিজেদের কড়া অবস্থান বিনয়-অনীত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁরা দাবি করেছেন, বিমল আর পাহাড়ের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক নন। বিমল পাহাড়ে ফিরলে অশান্তির আগুন জ্বলবে এবং মুখ পুড়বে রাজ্য প্রশাসনেরই। তবে সূত্রের খবর, বিনয়রা না চাইলেও, ‘টিম পিকে’ মরিয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাহাড়ে বিমলকে ফেরাতে। তাই বিনয়পন্থীরা পাহাড়ের সর্বত্র বিমলবিরোধী মিছিল করে একদিকে যেমন রাজ্য প্রশাসনকে বার্তা দিতে চাইছে যে, বিমল এখন পাহাড়ের রাজনীতিতে অতীত মাত্র।